অফিসে অশান্তি? বিরক্তিকর সহকর্মীকে সামলানোর ৬ কৌশল

অফিসে কাজের পরিবেশ মনের মতো না হলে কাজের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনই তা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দিনের অনেকটা সময় যেখানে কাটাতে হয়, সেখানে যদি শান্তির অভাব থাকে, তবে কাজের প্রতি বিরক্তি আসা স্বাভাবিক। অফিসের নানা রকম চাপ এবং সহকর্মীদের বিভিন্ন স্বভাবের সঙ্গে মানিয়ে চলাটা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে।

তবে কিছু সহকর্মী থাকেন, যাদের আচরণ অন্যদের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাদের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে না গিয়ে কিছু কৌশল অবলম্বন করলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় এবং কর্মক্ষেত্রে শান্তি বজায় থাকে। জেনে নিন তেমন ৬টি কৌশল:

১. ব্যক্তিত্ব বজায় রাখুন: মনে রাখবেন, অফিস একটি কর্মক্ষেত্র। কোনও সহকর্মীর বিরক্তিকর আচরণ নিয়ে অন্য সহকর্মীদের কাছে অভিযোগ করা বা তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সেই সহকর্মীর সমালোচনা করা দীর্ঘমেয়াদে ফলপ্রসূ নয়। এতে অফিসের পরিবেশ আরও খারাপ হয় এবং ধীরে ধীরে আপনিও হাসির পাত্র হয়ে উঠতে পারেন। তাই প্রথম থেকেই এমন সহকর্মীর সামনে নিজের ব্যক্তিত্ব দৃঢ়ভাবে তুলে ধরুন। যাতে তিনি সহজে আপনার সঙ্গে অকারণে বিতর্ক বা ঝামেলায় জড়াতে না পারেন।

২. অপ্রয়োজনীয় আলোচনা এড়িয়ে চলুন: কাজের প্রয়োজন বা জরুরি কথা ছাড়া এমন সহকর্মীর সঙ্গে খুব বেশি অন্য বিষয়ে আলোচনা করবেন না। তাদের বলা কোনও মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দেওয়া থেকেও বিরত থাকুন। সাধারণত এই ধরনের ব্যক্তিরা এক কথার অন্য মানে বের করে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

৩. উপেক্ষা করুন: তাদের বলা অযৌক্তিক কথা বা মন্তব্য নিয়ে অকারণে উত্তেজিত হবেন না। বরং সেইসব কথাকে মজার ছলে উড়িয়ে দিন এবং বুঝিয়ে দিন যে আপনি তাদের কথায় কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন না। মনে রাখবেন, উপেক্ষাই এই ধরনের মানুষকে জব্দ করার সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার।

৪. ঊর্ধ্বতন হলে কৌশলী হন: যদি সেই বিরক্তিকর ব্যক্তি আপনার চেয়ে উচ্চপদস্থ হন, তবুও তাকে ছাড় দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তবে এক্ষেত্রে সরাসরি সংঘাতের পথে না হেঁটে কৌশলী হন। যে বিষয়গুলোতে তিনি আলোচনা করতে পছন্দ করেন বা যে বিষয়ে তিনি বিরক্ত হন না, পারলে সেইসব বিষয়ে কথা বলুন। নিজের কাজের ক্ষেত্রে কোনো ফাঁক রাখবেন না, যাতে তিনি আপনাকে বিরক্ত করার সুযোগ না পান।

৫. ঠান্ডা মাথায় প্রতিক্রিয়া দিন: যদি সেই সহকর্মীর সঙ্গে কোনো বিষয়ে সমস্যা তৈরিও হয়, তবে মন শান্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে অংশ নেবেন না। বরং সংযতভাবে তাকে জানান যে এই বিষয়ে আপনি কিছু পরে তার সঙ্গে আলোচনা করবেন। এতে পরিস্থিতি শান্ত রাখার সুযোগ পাওয়া যায়।

৬. প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষের সাহায্য নিন: এত চেষ্টার পরেও যদি সেই ব্যক্তির আচরণে কোনো পরিবর্তন না আসে এবং তার কারণে আপনার কাজের ক্ষতি হয়, তবে তাকে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে জানান। তার পরেও যদি তিনি নিজের অভ্যাস না বদলান, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন। কর্মক্ষেত্রে একটি সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখা সকলের দায়িত্ব।

এই কৌশলগুলি অবলম্বন করে আপনি কর্মক্ষেত্রে শান্তি বজায় রাখতে পারবেন এবং বিরক্তিকর সহকর্মীদের এড়িয়ে গিয়ে নিজের কাজে মনোযোগ দিতে পারবেন। মনে রাখবেন, একটি শান্তিপূর্ণ কর্মপরিবেশ আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy