গরমে শরীর জুড়াতে তরমুজ, ফেলনা নয় খোসাও!

গরমকাল মানেই বাজারে থরে থরে সাজানো তরমুজ। এই সময়ে এই ফলটি শুধু জনপ্রিয়ই নয়, শরীর ও মনকে সতেজ রাখতে এর জুড়ি মেলা ভার। মিষ্টি স্বাদের পাশাপাশি তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জল (প্রায় ৯২ শতাংশ)। এছাড়াও ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় উপাদানও এতে বিদ্যমান। গরমে প্রাণ জুড়াতে তরমুজের বিকল্প খুঁজে পাওয়া কঠিন।

তবে মজার বিষয় হলো, আমরা সাধারণত তরমুজের কেবল লাল অংশটিই খেয়ে থাকি এবং পুরু খোসাটি ফেলে দিই। খোসা পুরু হওয়ার কারণে তরমুজের একটি বড় অংশই বাদ পড়ে যায়। কিন্তু সত্যিই কি এই খোসার কোনো উপকারিতা নেই? যদি আপনিও তরমুজ খাওয়ার পর খোসা ফেলে দেন, তবে এর গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে নিন-

শরীরের শক্তি যোগায়: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরমুজের খোসায় রয়েছে সিট্রুলাইন নামক একটি উপাদান। এই উপাদানটি শরীরের শক্তি ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। পাশাপাশি, এটি রক্তনালীকে প্রসারিত করতেও ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী, ব্যায়ামের সময় সিট্রুলাইনের অভাব পেশীতে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত করতে পারে। তরমুজের খোসা সেই অভাব পূরণ করে শরীরকে দ্রুত শক্তি ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও কাজ করে।

উচ্চ রক্তচাপ কমায়: যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত তরমুজের খোসা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজের নির্যাস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই এই উপকারী অংশটি ফেলে না দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে উপকার পাওয়া যায়।

মেদ ঝরাতে সাহায্য করে: যারা অতিরিক্ত মেদ নিয়ে চিন্তিত, তারা তরমুজের পাশাপাশি এর খোসাও খেতে পারেন। কারণ এটি ফাইবার সমৃদ্ধ। কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করতে নিয়মিত তরমুজের খোসা খাওয়া যেতে পারে। এটি কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও কমাতে সাহায্য করে। ফাইবারের অভাব পূরণে তরমুজের খোসা একটি দারুণ বিকল্প। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই খোসায় ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকায় এটি ওজন নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে মনে রাখবেন, খোসার বাইরের সবুজ অংশটি খাওয়া উচিত নয়, কারণ এটি পেটে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। লাল অংশের পরে এবং সবুজ অংশের আগে যে সাদা অংশটি থাকে, সেটিই খাওয়ার উপযুক্ত।

কীভাবে খাবেন তরমুজের খোসা?

তরমুজের খোসা বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যেতে পারে:

তরমুজের খোসা দিয়ে সুস্বাদু সালাদ বা স্বাস্থ্যকর জুস তৈরি করা যায়।
এই খোসা দিয়ে আচার বা মজাদার হালুয়াও তৈরি করা সম্ভব।
ছোট ছোট টুকরো করে কেটে ডালের সাথে মিশিয়ে রান্না করে খাওয়া যেতে পারে।
সাধারণ সবজির মতো ভেজে বা অন্যান্য সবজির সাথে মিশিয়েও রান্না করা যায়।
সুতরাং, পরেরবার তরমুজ খাওয়ার সময় খোসা ফেলে না দিয়ে এর উপকারিতাগুলি একবার ভেবে দেখুন। এটি কেবল আপনার শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাবে না, বরং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানেও সাহায্য করতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy