বয়স ভেদে সঠিক পুষ্টি, সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি

সুস্থ জীবনযাপন এবং রোগমুক্ত থাকার জন্য ডায়েট চার্টে পুষ্টিকর খাবার থাকা আবশ্যিক। তবে কোন বয়সে শরীরের কী ধরনের পুষ্টি এবং কত পরিমাণে প্রয়োজন, তা জেনে ডায়েট চার্ট তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। বয়স, ওজন এবং কায়িক পরিশ্রমের ধরনের ওপর ভিত্তি করে ডায়েট তৈরি করা হয়। এর পাশাপাশি ক্যালরি গ্রহণ এবং ক্যালরি খরচের হিসাবও মাথায় রাখতে হয়।

বয়স অনুযায়ী আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা ভিন্ন ভিন্ন হয়। সেই অনুযায়ী সঠিক ফিটনেস পরিকল্পনা করা উচিত। একটি সুশৃঙ্খল জীবনযাত্রা, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং সঠিক পুষ্টি – এই তিনটি জিনিসই আমাদের সুস্থ রাখতে সহায়ক।

টিনেজারদের ডায়েট:

ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপিত হয় কৈশোরেই। জীবনচক্রের অন্যান্য সময়ের তুলনায় এই বয়সে শরীরের সবচেয়ে বেশি পুষ্টির প্রয়োজন। তাই ডায়েটে সুষম খাদ্য থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার অপরিহার্য। মাছ, অ্যাভোকাডো, বাদাম এবং অলিভ অয়েলের মতো স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খাবারের তালিকায় যোগ করতেই হবে। মেয়েদের শরীরে এই সময়ে অনেক হরমোনের পরিবর্তন ঘটে, তাই তাদের শরীরে লোহার চাহিদা বাড়ে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় যেমন রাখতে হবে, তেমনই চিনি, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাট এবং জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলতে হবে।

৩০-এর নীচে বয়স হলে:

এই বয়সে শরীরে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বাড়ানো জরুরি। এর পাশাপাশি ভিটামিন ডি-ও প্রয়োজন। মহিলাদের ক্ষেত্রে যারা গর্ভবতী বা বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন, তাদের খাদ্যতালিকায় চর্বিহীন প্রোটিন, আয়রন এবং ভিটামিন সি রাখতে হবে। গর্ভধারণের পরিকল্পনা করলে ভিটামিন ডি, বি-১২, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা অপরিহার্য। এই বয়সের সকল নারীদের জন্য সুষম খাদ্যের মধ্যে কিছু মাংস এবং দুগ্ধজাত খাবার, সামুদ্রিক খাবার, সবুজ শাকসবজি, ডাল এবং শস্য, শুকনো ফল এবং সাইট্রাস সমৃদ্ধ ফল অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। 1  
1.
bengali.news18.com
bengali.news18.com

৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সে ডায়েট চার্ট:

এই সময়ে নারীদের মেনোপজ শুরু হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে শরীরে লোহার অভাব দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। এই বয়সে বিপাক ক্রিয়াও ধীর হয়ে যায়, তাই ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। এই সময়ে ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যতালিকায় বেরি, কোকো, গ্রিন টি এবং আরও আঁশযুক্ত খাবার যেমন শস্য ও শাকসবজি রাখতে হবে। শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করার জন্য লোহার প্রয়োজন। শরীরের পাশাপাশি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে সঠিক পরিমাণে প্রোটিনও জরুরি।

৬০ বছরের ওপরে যাদের বয়স:

বয়স কেবল একটি সংখ্যা হলেও, ৬০ বছর বয়সেও ফিট থাকতে চাইলে খাবারে পুষ্টির পরিমাণ বাড়াতে হবে। খাদ্যতালিকায় ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং অতিরিক্ত লবণ এড়িয়ে চলতে হবে। এই বয়সে মশলাদার খাবার অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়াতে পারে। মিষ্টি এবং চিনির ভারসাম্য নষ্ট হলে ডায়াবেটিস হতে পারে, তাই এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ দুগ্ধজাত পণ্য ডায়েটে যোগ করা অপরিহার্য।

পরিশেষে বলা যায়, বয়স ভেদে সঠিক পুষ্টি গ্রহণ করা সুস্থ জীবনের মূল চাবিকাঠি। তাই নিজের বয়স এবং শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী সঠিক ডায়েট চার্ট তৈরি করে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy