বাইক চালালে শরীর ব্যথায় কষ্ট পান? জেনে নিন মুক্তির সহজ উপায়

যারা নিয়মিত মোটরসাইকেল চালান, তাদের কাছে শরীর ব্যথা একটি অতি পরিচিত এবং গুরুতর সমস্যা। বিশেষ করে হাত, ঘাড়, পিঠ কিংবা কোমরে তীব্র যন্ত্রণায় ভোগেন বহু বাইক রাইডার।

অনেকেই এই বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেন না, আবার কেউ কেউ ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে সাময়িকভাবে আরাম পান। তবে অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ কিডনির উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।

তবে জানেন কি, কিছু ভুল অভ্যাস এবং অসচেতনতার কারণেই মূলত বাইক রাইডারদের শরীরে এই ধরনের ব্যথা হয়ে থাকে? আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই ভুলগুলো, যা বাইক চালানোর সময় শরীরে ব্যথার কারণ হতে পারে:

১. ভুল বাইক নির্বাচন:

রাইডিংয়ের সময় শরীর ব্যথা হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো ভুল বাইক নির্বাচন। বাইক কেনার সময় অনেকেই শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখে আকৃষ্ট হন, কিন্তু নিজেদের শারীরিক গঠনের কথা ভাবেন না। মনে রাখবেন, প্রতিটি মানুষের শরীরের গঠন আলাদা। তাই বাইকে বসে যদি আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করেন, তাহলে দীর্ঘক্ষণ রাইডিং করলে শরীর ব্যথা এবং পরবর্তীতে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাইক কেনার আগে অবশ্যই যাচাই করুন সেটি আপনার জন্য উপযুক্ত কি না।

২. ভুল পজিশনে বসা:

অনেকেরই বাইকে সঠিক পজিশনে না বসার অভ্যাস রয়েছে। যখন আপনার বাইকে বসার ভঙ্গি ঠিক থাকবে না, তখন শরীরের বিভিন্ন অংশে এমনিতেই ব্যথা অনুভব হবে। এছাড়াও, অনেকে অকারণে মেরুদণ্ড বাঁকা করে বাইক চালান, যা ব্যাক পেইনের অন্যতম কারণ। পায়ের পাতা গিয়ার লিভারের ভেতর দিয়ে নিচের দিকে রাখা একটি খারাপ অভ্যাস। এই অবস্থায় দুর্ঘটনা ঘটলে আপনার পায়ের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও, এর কারণে শরীর ব্যথাও হতে পারে। সবসময় পা দিয়ে ফুয়েল ট্যাংক শক্ত করে চেপে ধরে বাইক রাইড করুন। এতে আপনার হাঁটুতে ব্যথা হবে না এবং বাইকের উপর নিয়ন্ত্রণও ভালো থাকবে।

৩. হাতের উপর অতিরিক্ত চাপ:

বাইক চালানোর সময় ডান হাত সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। সামনের ব্রেক ধরা এবং থ্রটল ঘোরানোর কাজ ডান হাত দিয়েই করতে হয়। ফলে অনেকেরই ডান হাতের কবজি ও তালুতে ব্যথা অনুভব হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নরম গ্রিপ এবং থ্রটল হোল্ডার ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এতে আরাম পাওয়া যেতে পারে।

৪. বাইকের অ্যাডজাস্টমেন্ট না করা:

একেক জনের শারীরিক গঠন ভিন্ন হওয়ার কারণে একটি নির্দিষ্ট মাপের বাইক সবার জন্য আরামদায়ক নাও হতে পারে। তবে বেশিরভাগ বাইকের হ্যান্ডেলবার এবং সিটের উচ্চতা অ্যাডজাস্ট করার সুযোগ থাকে। বাইক কেনার পর নিজের উচ্চতা এবং শারীরিক কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হ্যান্ডেলবার ও সিটের উচ্চতা ঠিক করে নিন। এর ফলে কোমর এবং জয়েন্টে ব্যথার সমস্যা অনেকাংশে কম হবে।

৫. শরীরে অপ্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগ:

মোটরসাইকেল চালানোর সময় শরীরের কোনো অংশে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করা উচিত নয়। কিছু খারাপ অভ্যাস, ভুল রাইডিংয়ের ধরন পরিবর্তন এবং সঠিক বাইক নির্বাচনের মাধ্যমে আপনি রাইডিং সংক্রান্ত যাবতীয় শরীর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

মোটকথা, সচেতনতা এবং কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললে বাইক রাইডাররা শরীর ব্যথার মতো কষ্টকর সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পেতে পারেন এবং নিরাপদে রাইডিং উপভোগ করতে পারেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy