ঘরে ঘরে এখন ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা। খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেই একটাই উত্তর, “ইউরিক অ্যাসিড আছে!” বিশ্বে প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। গাঁটের ব্যথায় কাতর হয়ে বিছানায় দিন কাটাচ্ছেন অনেকেই। ইউরিক অ্যাসিড কমানোর জন্য কী করা উচিত আর কী নয়, এই প্রশ্নটা যেন এখন প্রায় সবার মুখেই। সত্যিই কি ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে খাবারের উপর কড়া নিয়ম মেনে চলা বাধ্যতামূলক?
চিকিৎসকেরা বলছেন, শুধু খাবার কমালেই ইউরিক অ্যাসিড কমে না। তবে ঘরোয়া টোটকা হিসেবে অনেকেই ধনিয়া ভেজানো জল পান করেন। তাদের বিশ্বাস, এটি নিয়মিত খেলে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ধনিয়াতে কী এমন আছে?
ধনিয়া শুধু একটি মশলাই নয়, এটি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। এতে প্রোটিন, ফ্যাট, ফাইবার এবং খনিজ পদার্থের পাশাপাশি ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ও নিকোটিনিক অ্যাসিড বিদ্যমান। এই মশলায় রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। এছাড়াও, লুটেয়োলিন ও বিটা-সেলিনিন নামক দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানও পাওয়া যায় ধনেতে। মনে করা হয়, মূলত এই দুটি উপাদানই রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে কখন খাবেন ধনিয়া ভেজানো জল?
ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় যারা ভুগছেন, তারা এক গ্লাস জলে রাতে ধনিয়া ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে সেই জল পান করতে পারেন। এছাড়াও, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও এক গ্লাস ধনিয়া ভেজানো জল খাওয়া যেতে পারে, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
শুধু ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণেই নয়, ধনিয়া ভেজানো জল হজম সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা নিরাময়েও সহায়ক। যেহেতু ধনেতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে, তাই এটি শরীরের প্রদাহজনিত ব্যথাবেদনা কমাতেও সাহায্য করে।
তবে, ঘরোয়া টোটকা হিসেবে ধনিয়া ভেজানো জল উপকারী হলেও, ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা গুরুতর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কেবলমাত্র ঘরোয়া পদ্ধতির উপর নির্ভর করে থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সঠিক ডায়েট প্ল্যান এবং ডাক্তারের নির্দেশিকা মেনে চলাই ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখার সর্বোত্তম উপায়।