“চোখের ভাষা মনের ভাষার প্রথম পরিচয়” – এই প্রবাদটির সাথে বিজ্ঞানেরও একটি মজবুত সম্পর্ক রয়েছে। কারো প্রতি আকৃষ্ট হলে আমাদের চোখের মণি বড় হয়ে যায়। কিন্তু আপনি কি জানেন, আপনার চোখের মণি আপনার সম্পর্কে আরও অনেক কিছু বলে দিতে পারে?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এক গবেষণায় আবিষ্কার করেছেন যে, চক্ষুতারার আকার একজন ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তার সাথে সম্পর্কিত।
বিজ্ঞানী জ্যাসম সুকাহারা এবং র্যান্ডাল অ্যাঙ্গেল এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন। তারা আলেকজান্ডার বার্গোয়েনের সহযোগিতায় একটি বৈজ্ঞানিক আমেরিকান নিবন্ধে তাদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছেন। নিবন্ধটি চেতনা বিষয়ক জুন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, “আমরা দেখতে পেয়েছি যে, জ্ঞানের পরীক্ষায় যারা সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে এবং যারা সর্বনিম্ন নম্বর পেয়েছে তাদের চক্ষুতারার আকারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে।”
গবেষণায় ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সের মধ্যে ৫০০ জন ব্যক্তির উপর পরীক্ষা করা হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের ল্যাবরেটরির আলোতে একটি ফাঁকা কম্পিউটার স্ক্রিনে তাকাতে বলা হয়েছিল। এরপর, গবেষকরা আই ট্র্যাকার ব্যবহার করে তাদের চক্ষুতারার আকার পরিমাপ করেছিলেন।
কর্ণিয়া এবং চোখের মণিকে সঠিকভাবে বোঝার জন্য একটি উচ্চ-শক্তিযুক্ত ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছিল। ক্যামেরাটি আই ট্র্যাকারের সাথে সংযুক্ত ছিল। বিজ্ঞানীরা আই ট্র্যাকার ব্যবহার করে প্রত্যেক ব্যক্তির চোখের মণির গড় আকার পরিমাপ করেছিলেন।
গবেষণার ফলাফল থেকে দেখা গেছে যে, যাদের চক্ষুতারা বড়, তারা জ্ঞানের পরীক্ষায় ভালো করেছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, চক্ষুতারার আকারের সাথে বুদ্ধিমত্তার সম্পর্কের কারণ হলো মস্তিষ্কের গঠন। যাদের মস্তিষ্কের কর্টেক্স অঞ্চল বড়, তাদের চক্ষুতারাও বড় হয়। কর্টেক্স অঞ্চল বুদ্ধিমত্তার জন্য দায়ী।
এই গবেষণা বুদ্ধিমত্তার পরিমাপের জন্য একটি নতুন পদ্ধতির সম্ভাবনা তৈরি করেছে। ভবিষ্যতে, চোখের মণি পরীক্ষা করে একজন ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তার স্তর নির্ধারণ করা সম্ভব হতে পারে।
তবে এই গবেষণার কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।