অনেকেই মনে করেন তেল-মাখন থেকে দূরে থাকাই ভালো, কিন্তু খাঁটি দেশি ঘি স্বাস্থ্য উপকারিতায় ভরপুর। বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘি খেলে হজম ক্ষমতা উন্নত হয়, বিপাকক্রিয়া ভালো থাকে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
ঘি কেন উপকারী?
দেশি ঘি তৈরি হয় ধীরে ধীরে মাখন গরম করে, যাতে জল ও দুধের কঠিন অংশ আলাদা হয়ে যায় এবং বিশুদ্ধ সোনালি চর্বি পাওয়া যায়। এতে থাকে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন (এ, ডি, ই, কে) ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রক্রিয়াজাত তেলের পরিবর্তে ঘি শর্ট ও মিডিয়াম-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড সরবরাহ করে, যা দ্রুত শক্তি দেয় এবং হজমশক্তি উন্নত করে।
দেশি ঘির উপকারিতা
✅ হজমশক্তি উন্নত করে – ঘি পাকস্থলীর কোষ পুষ্টি জোগায় এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। অ্যাসিডিটি, পেট ফাঁপা ও আইবিএস (Irritable Bowel Syndrome)-এর সমস্যা কমায়।
✅ পুষ্টি শোষণ বাড়ায় – ঘি খাবারের ভিটামিন ও খনিজ শোষণে সাহায্য করে, ফলে শরীর কার্যকরভাবে পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে।
✅ ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে – ঘি পেট ভরানোর অনুভূতি দেয়, ক্ষুধা কমায় ও অতিরিক্ত খাওয়া ঠেকায়।
✅ হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো – এতে থাকা ‘কনজুগেটেড লিনোলেইক অ্যাসিড’ (CLA) হৃদরোগ প্রতিরোধ করে, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায় ও ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
দিনে কতটুকু ঘি খাওয়া স্বাস্থ্যকর?
পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিনের মোট ক্যালোরির ২০-৩৫% ফ্যাট থেকে আসা উচিত, যার ১০%-এর কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট হতে পারে। এক চামচ ঘিতে ১৫ গ্রাম ফ্যাটের মধ্যে ৯ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। তাই দিনে দু’চামচ ঘি খাওয়া নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর, যদি কোলেস্টেরল বা হার্টের সমস্যা না থাকে।
খাঁটি দেশি ঘি চিনবেন কীভাবে?
অনেক সময় কৃত্রিম স্বাদযুক্ত বনস্পতি ঘি হিসেবে বিক্রি করা হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই দোকান থেকে কেনার চেয়ে ঘরে বানানো দেশি ঘি সবচেয়ে ভালো।
উপসংহার
সঠিক পরিমাণে ঘি খেলে এটি শুধু ওজন নিয়ন্ত্রণেই সাহায্য করে না, বরং হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, হজমশক্তি বাড়ায় এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়। তবে অতিরিক্ত না খেয়ে পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।