কাঁচা ডিম বনাম রান্না করা ডিম, কোনটি বেশি ভালো দেখুন –

প্রোটিনে ভরপুর ডিম। তাই শরীরে প্রোটিনের যোগান দিতে সবাই খাবারে রাখেন ডিম। ভাজা, পোচ এমনকি রান্না করে খাওয়া হয় ডিম। ব্যস্ত থাকার জন্য একদিন বেশি পরিমাণে ডিম রান্না করে ফ্রিজে রেখে দেন অনেকে। তারপর প্রতিদিন ফ্রিজ থেকে বের করে গরম করে খেয়ে থাকেন। আবার ভাজা ডিম ঠাণ্ডা হয়ে গেলে পুনরায় গরম করার অভ্যাস রয়েছে গৃহিনীদের। কিন্তু এভাবে বার বার গরম করায় নষ্ট হচ্ছে ডিমের সব গুণ।

আমাদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন যারা কাঁচা ডিম পছন্দ করেন। তারা মনে করেন, ভাজা, পোচ ও রান্না করলে ডিমের পুষ্টিগুণ কিছুটা হলেও নষ্ট হয়। তাই তারা কাঁচা ডিম ফাটিয়ে মুখে ঢেলে দেন। দুধের সঙ্গেও কাঁচা ডিম গুলিয়ে খেতে দেখা যায় কাউকে কাউকে।

দ্য জার্নাল অফ নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দাবি, ডিমের প্রোটিন গ্রহণ এবং তা হজম, দু’দিক থেকেই কাঁচা ডিমের চেয়ে এগিয়ে রান্না করা ডিম। রান্না করা ডিমে প্রোটিনের উপস্থিতি ৯১ শতাংশ। সেখানে কাঁচা ডিমে প্রোটিনের উপস্থিতি ৫০ শতাংশ। কাঁচা ডিমে সুপাচ্য বা হজমসাধ্য প্রোটিনের পরিমাণ ৩ গ্রাম। রান্না করা গোটা ডিমে সেটাই হল ৬ গ্রাম অর্থাৎ দ্বিগুণ।

ডিম রান্নার সময় তার পুষ্টিগুণে গঠনগত পরিবর্তন হয়। বেড়ে যায় হজমসাধ্য প্রোটিনের পরিমাণ। ডিমে থাকা ট্রিপসিন এনজাইম প্রোটিন ভেঙে তা হজমে সহায়তা করে। কিন্তু কাঁচা ডিমে থাকা অন্য এনজাইম বা উৎসেচক ট্রিপসিনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে প্রোটিনের সহজপাচ্যতা বিঘ্নিত হয়।

রান্না করা ডিমে বাড়তি পুষ্টিগুণ তো পেলেন। কিন্তু শুনলে অবাক হবেন, দ্বিতীয়বার গরম করতে গিয়ে সেই পুষ্টিগুণটাই নষ্ট করে ফেলছেন আপনি। তার কারণ, ডিম দ্বিতীয় বার গরম করলে তার প্রোটিন নষ্ট হয়ে যায়। বার বার গরম করলে ডিমের মধ্যে নানা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। ওই ব্যাকটেরিয়া পেটের পক্ষে ক্ষতিকারক।

ডিমের মধ্যে থাকা হাই প্রোটিনে নাইট্রোজেনও থাকে। ডিম দ্বিতীয়বার গরম করলে ওই নাইট্রোজেন অক্সিডাইজড হয় যা ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। তাই পুষ্টিবিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিমের ঝোল বা অমলেট কোনটাই দ্বিতীয়বার গরম করে খাওয়া ভাল নয়।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy