দেশজুড়ে ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হতেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতদিন চোরাপথে অনুপ্রবেশের খবর মিললেও, এবার অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করা শত শত বাংলাদেশি নাগরিক সরাসরি বিএসএফ চেক পোস্টের সামনে ভিড় জমিয়েছেন—তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য, বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া।
অভিযোগ, রোজগারের আশায় দালাল ধরে কাঁটাতার পেরিয়ে সপরিবার ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এই অনুপ্রবেশকারীরা। কিন্তু SIR শুরু হওয়ায় ভোটার তালিকায় নাম থাকার বা ধরা পড়ার আশঙ্কায় তাঁরা ফের বাংলাদেশে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তবে, বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF) তাঁদের ফিরতে বাধা দিয়েছে।
প্রায় ৩০০ অনুপ্রবেশকারী চেক পোস্টে
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্বরূপনগরের হাকিমপুর সীমান্তে বিএসএফ চেক পোস্টের সামনে বর্তমানে এমনই ছবি। ভারতীয় ভূখণ্ডে ব্যাগপত্র, ট্রলি এবং লোটা-কম্বল নিয়ে ভিড় করেছেন প্রায় ৩০০ জন মানুষ। এঁরা নিজেরাই স্বীকার করছেন, তাঁরা বাংলাদেশি এবং কয়েক বছর আগে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন।
এই ভিড় প্রসঙ্গে বিএসএফের ১৪৩ নম্বর ফ্রন্টের এক আধিকারিক স্পষ্ট জানিয়েছেন, “বিএসএফ জওয়ানরা যথেষ্ট সজাগ রয়েছেন। বৈধ নথি না-থাকলে অবৈধভাবে কোনও অনুপ্রবেশকারীকে চেক পোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। কেউ তা করার চেষ্টা করলে তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” ফলে অনুপ্রবেশকারীদের জন্য পরিস্থিতি এখন ‘শাঁখের করাত’।
‘পেটের দায়ে এসেছিলাম, এখন ফিরে যেতে চাইছি’
চেক পোস্টের সামনে অপেক্ষারত সাবিনা পারভিন নামে এক বাংলাদেশি বলেন, “আমার বাড়ি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলায়। পেটের দায়ে অবৈধভাবে এদেশে বসবাস করছিলাম। কোনও কাগজপত্র নেই। এখন আবার সাতক্ষীরায় ফিরে যেতে চাইছি। তার জন্যই অপেক্ষা করে রয়েছি এখানে।”
আরেক বাংলাদেশি মহম্মদ আসরাফ বলেন, “আমার বাড়ি বাংলাদেশের কুশুমান্ডি গ্রামে। এখানে বিরাটিতে থাকতাম। এখন নিজের গ্রামে ফিরে যাব। আমার মতো এখানে অনেকেই রয়েছে, যারা চিনারপার্ক বা অন্য কোথাও থাকত। পেটের টানে বাধ্য হয়েই ভারতে আসতে হয়েছিল।”
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের শুরু থেকে গত তিনদিন পর্যন্ত শতাধিক বাংলাদেশি ধরা পড়েছে বিএসএফের হাতে। অভিযোগ, এরা সকলেই চোরাপথে স্বরূপনগরের বিথারী ও তারালি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টা করছিল, তখনই হাতেনাতে ধরা পড়ে যায়।