বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর এই প্রথম সরকারি প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত। নয়াদিল্লি স্পষ্ট জানিয়েছে যে, ভারত সরকার এই রায় নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের প্রতি সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রক থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে, তারা বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (ICT-BD) কর্তৃক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেওয়া রায়ের বিষয়টি ‘নোট’ করেছে।
ভারত শান্তি, গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার ওপর জোর দেয়
ভারত সরকার প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে পুনরায় জোর দিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক আরও বলেছে যে, এই অঞ্চলে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ভারত সর্বদা এই মূল্যবোধের সমর্থনে থাকবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ভবিষ্যতেও বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে ভারত বাংলাদেশের সমস্ত অংশীদারদের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপ চালিয়ে যাবে।
‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’-এর জন্য সাজা
জানিয়ে রাখি, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যে গণবিক্ষোভ (‘জুলাই বিদ্রোহ’) হয়েছিল, সেই সময়ে সংঘটিত “মানবতাবিরোধী অপরাধ”-এর জন্য বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (ICT-BD) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। গত বছরের ৫ অগাস্ট তাঁর সরকারের পতনের পর থেকে ৭৮ বছর বয়সী হাসিনা ভারতে বসবাস করছেন।
ট্রাইব্যুনাল রায় পাঠ করে বলেছে, গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ১৫ অগাস্টের মধ্যে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের ওপর ভয়াবহ দমন-পীড়নের পেছনে হাসিনার হাত ছিল বলে রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করেছে। আদালতে এই রায় ঘোষণার আগেই হাসিনাকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করা হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের একটি রিপোর্টে অনুমান করা হয়েছে যে প্রায় ১ মাস ধরে চলা এই আন্দোলনে ১,৪০০ জন নিহত হন। নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ, উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে হত্যার দিকে পরিচালিত করে এমন প্রচার চালানোর অনুমতি দেওয়ার জন্যই হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।