বিহার বিধানসভা নির্বাচনে লজ্জাজনক পরাজয়ের চার দিন পর অবশেষে আত্মবিশ্লেষণের মঞ্চে ফিরলেন জনসুরাজ সুপ্রিমো প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)। মঙ্গলবার পটনায় সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তিনি দলের ভোট-ফলকে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক পথচলার সঙ্গে তুলনা করে রাজনৈতিক মহলে নতুন জল্পনা উসকে দিয়েছেন।
এবারের ভরাডুবির পর নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী, এমন স্পষ্ট প্রশ্নের জবাবে পিকে বলেন, “ইমরান খান আজ থেকে ২৫–৩০ বছর আগে নিজের দল তৈরি করেছিলেন। প্রথম নির্বাচনে তিনি ৭টি আসনে লড়ে সাতটিতেই হেরেছিলেন। তাই প্রথম ভোটে খারাপ ফল মানেই চিরন্তন পরাজয় নয়।” তিনি দাবি করেন, ইতিহাসে এমন নজির অসংখ্য; প্রথম ধাক্কা মানেই যে পথের শেষ নয়, তা প্রমাণিত।
১৪০ আসনের মন্তব্য ঘিরে সমালোচকদের খোঁচা
একসময় প্রশান্ত কিশোরই বলেছিলেন, “১৪০টির কম আসন পেলে ব্যক্তিগত পরাজয় মেনে নেব।” সেই মন্তব্য মনে করিয়ে দিয়ে সমালোচকরা প্রশ্ন তুললে উত্তরে পিকে জানান, “আমরা আমাদের কথা জনতার কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দিতে পারিনি। জনগণ আমাদের বিশ্বাস করতে পারেনি। সেই দায় আমার।” তবে বিজয়ী এনডিএ-কে অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি তিনি। তাঁর কথায়, “ওরাই জিতেছে। তাই এখন তাঁদেরই গুরুদায়িত্ব।”
আত্মসমালোচনা ও প্রায়শ্চিত্তের জন্য ‘মৌন উপবাস’
সাংবাদিক বৈঠকে পিকে একটি বড় ঘোষণা করেন—আগামী ২০ নভেম্বর তিনি ভিতিহারওয়া আশ্রমে যাবেন এবং সেখানে এক দিনের ‘মৌন উপবাস’ পালন করবেন। তাঁর এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য, মৌনতার মধ্য দিয়ে আত্মসমালোচনা ও প্রায়শ্চিত্ত করা। পিকে বলেন, “আমি হয়তো কোনও ভুল করেছি, কিন্তু অপরাধ করিনি। ভোটে না জেতা কোনও অপরাধ নয়। ধাক্কা খেয়েছি ঠিকই, কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ার প্রশ্ন নেই।”
সবশেষে পিকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁর মূল লক্ষ্য একই—বিহারের পরিবর্তন। তিনি বলেন, “বিহার বদলানোই আমাদের উদ্দেশ্য। আর সেই লড়াই থেকে এত সহজে সরে যাওয়ার মানুষ আমি নই। আমরা ফের ভোটে দাঁড়াব।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পিকে-র এই ‘মৌন উপবাস’ আসলে ভরাডুবির ধাক্কা সামলে আগামীর লড়াইয়ের জন্য নতুন রণকৌশলের প্রস্তুতি।