জিআই তকমা পেয়েও কেন কমছে মোয়ার স্বাদ? জয়নগরের ঐতিহ্য বাঁচাতে রাতারাতি ৩৫টি খেজুর গাছের চারা রোপণ!

জিআই (GI) তকমা পাওয়ার পর থেকেই জয়নগরের মোয়ার চাহিদা ও কদর দেশজুড়ে বেড়েছে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এই বিখ্যাত মিষ্টান্নের প্রধান উপাদান—জিরান কাঠের নলেন গুড় ও কনকচূড় ধানের—চাহিদা। কিন্তু বসতি স্থাপন এবং জঙ্গল কেটে ফেলার কারণে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে খেজুর গাছের সংখ্যা, যার ফলে নলেন গুড়ের ভাঁড়ারে টান পড়ছে।

এই পরিস্থিতিতে মোয়ার ঐতিহ্য রক্ষা করতে এবং নলেন গুড়ের সরবরাহ বাড়াতে এক যুগান্তকারী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জয়নগরের তুলসীঘাটায় মোয়া ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বিধায়কের যৌথ উদ্যোগে ৩৫টি খেজুর গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে।

শীতকাল মানেই জয়নগরের মোয়ার মৌসুম। আর এই মোয়ার স্বাদ নির্ভর করে খেজুর গাছ থেকে উৎপাদিত খাঁটি নলেন গুড়ের ওপর। আগে জয়নগর ও বকুলতলা থানার একাধিক জায়গায় রাস্তার পাশে এবং নয়নজুলির ধারে অবহেলা, অনাদরেও প্রচুর খেজুর গাছ দেখা যেত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গল কেটে বসতি স্থাপন হওয়ায় গাছের সংখ্যা কমে গিয়েছে। এর সরাসরি ফলস্বরূপ, মোয়া তৈরির প্রধান উপাদানের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

সরকারের পাশাপাশি এবার মোয়া কারবারিরাও নড়েচড়ে বসেছেন। ভালো মানের মোয়া যেন খাদ্যপ্রেমীরা পান, তা নিশ্চিত করতে তাঁরাই উদ্যোগী হয়েছেন বেশি করে খেজুর গাছ লাগানোর।

তবে শুধু চারা রোপণ করেই ক্ষান্ত হননি তাঁরা। রোপণ করা চারা গাছগুলির নিয়মিত পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোয়া কারবারিরা প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছেন যেন এমন খেজুর গাছের চারা আরও বেশি সংখ্যায় বসানোর দিকে নজর দেওয়া হয়। তাঁদের মতে, গোটা জয়নগরেই গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় নতুন করে গাছ না বসালে আগামী দিনে মোয়া তৈরির জন্য গুড়ের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy