কলকাতা পুরনিগমের কোষাগারের খারাপ অবস্থার মধ্যে বড় সুখবর এল। সম্পত্তি কর (Property Tax) আদায় বিভাগে এসেছে বড় ইতিবাচক ফল। বিগত তিন বছরে বিদ্যুতের গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে পুরসভার আয়। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ছয় মাসেই কর আদায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা। এই বিপুল আয়ের ফলে অন্যান্য পুর পরিষেবা খাতে খরচ মেটানো নিয়ে কিছুটা হলেও চিন্তামুক্ত হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
করখেলাপিরাই ফেরাল হাল!
পুরনিগম সূত্রে জানা গেছে, এই রেকর্ড আয় বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হল, নিয়মিত করদাতাদের পাশাপাশি করখেলাপিদের বকেয়া টাকা মেটানো। বিভাগীয় কর্তারা এই বিষয়টিকে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। অতীতের রেকর্ড ভেঙে প্রতি বছরই সম্পত্তি কর মূল্যায়ন বিভাগের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তথ্যে প্রকাশ, ২০২০-২০২১ সালের প্রথম ৬ মাসে এই আয় ছিল ৭১০ কোটি টাকা, ২০২৩-২০২৪ সালে যা ছিল ৮১০ কোটি টাকা। পরের বছর, ২০২৪-২০২৫ সালে প্রথম ৬ মাসে কর আয় ছিল কমবেশি ৮২১ কোটি টাকা। আর চলতি অর্থবর্ষে সেই রেকর্ড ভেঙে আয় হল ৮৫০ কোটি টাকার কাছাকাছি।
এই বিষয়ে এক আধিকারিক বলেন, “নিয়মিত করদাতাদের কর তো আছেই, তবে বিশেষ করে আমাদের বিভাগের কর্মীরা বকেয়া করদাতাদের কাছ থেকে কর আদায়ে ভালো অংশে সক্ষম হচ্ছেন। যার জেরে এই রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। মেয়রের নেতৃত্বে বৈঠকে কর আদায় বৃদ্ধির যে পরিকল্পনা হয়েছিল, সেই মতো কাজ চলছে। সম্পত্তি মূল্যায়ন, মিউটেশন, বকেয়া আদায়—সবটাতেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”
খরচের স্বস্তি ও বকেয়া মেটানো
বাড়তি এই আয়ের টাকা কোষাগারে আসায় পুর কর্তৃপক্ষ খানিক স্বস্তি পেয়েছে। পুরনিগম সূত্রে খবর, এই টাকার একটি বড় অংশ ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন পরিষেবা ও রক্ষণাবেক্ষণে যুক্ত ঠিকাদারদের বকেয়া মেটানোর জন্য। ফলে ঠিকাদাররা যেমন খুশি, তেমনই পরিষেবা নিরবচ্ছিন্ন থাকছে। এছাড়া, কিছু প্রাক্তন কর্মীর বকেয়া প্রাপ্য এই টাকা থেকে মিটিয়ে দেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে।
ক্ষোভ: কেন আরও বেশি আয় হত না?
তবে, পুরনিগমের একাংশ মনে করছে, প্রথম ছয় মাসে যে অঙ্ক ছুঁয়েছে, তা আরও বেশি হতে পারত, যদি নিয়ম করে ৬ বছর অন্তর জেনারেল রিভ্যালুয়েশন (GR) বা নতুন করে সম্পত্তির মূল্যায়ন করা হত। তাতে মূল কর আদায়ের পরিমাণ আরও অনেক বেশি বৃদ্ধি পেত।