বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী মহাজোটের (মহাগঠবন্ধন) অভ্যন্তরীণ সংঘাত এবার এক অদ্ভুত পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে। দারভাঙ্গা জেলার গৌরা বাউরাম আসনে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-এর প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীর বিরুদ্ধেই খোদ দলের নেতা তেজস্বী যাদবকে প্রচার চালাতে হবে!
প্রতীক পেলেন, তারপরই আসন চলে গেল জোটে
ঘটনার সূত্রপাত আসন ভাগাভাগি নিয়ে। বিরোধী জোটের মধ্যে চূড়ান্ত রফা হওয়ার আগেই আরজেডি নেতৃত্ব গৌরা বাউরাম থেকে নেতা আফজল আলি খানকে দলীয় ‘হ্যারিকেন’ প্রতীক দিয়ে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে। আফজল খান টিকিট পেয়েই নির্বাচনী এলাকায় প্রচার শুরু করেন।
কিন্তু এর মধ্যেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়। আরজেডি নেতৃত্ব মুকেশ সাহনির ‘বিকাশশীল ইনসান পার্টি’ (VIP)-এর সঙ্গে জোটের রফা চূড়ান্ত করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, গৌরা বাউরাম আসনটি ভিআইপি-র কাছে চলে যায় এবং ঠিক হয় যে মহাজোটের সব শরিক দল ভিআইপি প্রার্থী সন্তোষ সাহনিকে সমর্থন করবে।
মনোনয়ন প্রত্যাহারে নারাজ আফজল
এরপরই আরজেডি নেতৃত্ব আফজল আলি খানকে দলীয় হ্যারিকেন প্রতীক ফিরিয়ে দেওয়ার এবং লড়াই থেকে সরে আসার জন্য অনুরোধ করেন। তবে আফজল এই অনুরোধে সাড়া দিতে নারাজ। তিনি আরজেডি প্রার্থী হিসাবে গৌরা বাউরাম আসনটি থেকে মনোনয়ন দাখিল করেন।
আরজেডি নেতৃত্ব নির্বাচন কমিশনকে জানায় যে, তারা আফজল আলি খানের প্রার্থী পদকে সমর্থন করে না। কিন্তু কমিশন সাফ জানিয়ে দেয়, আফজল যথাযথভাবে কাগজপত্র-সহ মনোনয়ন দাখিল করেছেন। ফলে কমিশন তাঁকে নির্বাচনী দৌড় থেকে বাদ দিতে অপারগ।
ফলাফলে প্রভাবের আশঙ্কা
বর্তমানে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) আরজেডি-র হ্যারিকেন প্রতীকের পাশে জ্বল জ্বল করবে আফজল আলি খানের নাম। ফলে নির্বাচনী প্রচারে এই কেন্দ্রে তেজস্বী যাদবদের মহাগঠবন্ধন-এর প্রার্থী (ভিআইপি-র সন্তোষ সাহনি) সমর্থনে, আরজেডি প্রতীকের প্রতিনিধিত্বকারী প্রার্থীর বিরুদ্ধেই প্রচার চালাতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, লোকসভা নির্বাচনের সময় রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যেখানে কংগ্রেসের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রায় ৬০ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়েছিলেন। গৌরা বাউরাম আসনে আফজল আলি খানের প্রার্থী হওয়া নিয়ে এই বিভ্রান্তি মহাজোটের ফলাফলের উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।