বন্ধ নাক একটি বিরক্তিকর সমস্যা, যা রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পারে। নাক খোলার জন্য বারবার চেষ্টা করেও অনেক সময় সুফল মেলে না। তবে নাকের উপর অযথা চাপ দেওয়ার আগে কিছু সহজ টিপস জেনে নিলে রাতে আরামদায়ক ঘুম হতে পারে।
দিনের বেলায় যা করবেন:
নাক ঝাড়ার প্রবণতা কমান: গবেষণায় দেখা গেছে, জোরে চাপ দিয়ে নাক ঝাড়লে নাকের জল সাইনাসে প্রবেশ করতে পারে। এর পরিবর্তে নরম টিস্যু দিয়ে হালকাভাবে নাক মোছা ভালো।
প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন: দিনের বেলা পর্যাপ্ত পরিমাণে হালকা গরম জল পান করুন। জলের পাশাপাশি শরবত বা স্যুপও খেতে পারেন। তরল জাতীয় খাবার মিউকাস বা শ্লেষ্মা নরম করে, যা পরে সহজে বের হয়ে আসে।
ডিকনজেস্ট্যান্ট ব্যবহার: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ডেকনজেস্ট্যান্ট ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। এটি নাকের ভেতরের রক্তনালীর ফোলা কমাতে সাহায্য করে। এই ওষুধ স্প্রে আকারেও পাওয়া যায়।
ঝাল খাবার খান: ঝাল জাতীয় খাবার মিউকাস নরম করতে সহায়ক হতে পারে। তবে যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে, তারা সাবধানে থাকুন।
দুপুরের পর ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন: দুপুর দুটোর পর চা, কফির মতো ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। এগুলো এনার্জি দিলেও শরীর থেকে জল দ্রুত বের করে দেয়। শরীর ডিহাইড্রেটেড হলে মিউকাস শক্ত হয়ে যায়।
লবণ জলে গার্গল: হালকা গরম লবণ জল দিয়ে গার্গল করলে বন্ধ নাক খোলার পাশাপাশি গলার ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসও দূর হয়।
গরম জলের ভাপ ও স্নান: গরম জলের ভাপ নিলে বা গরম জলে স্নান করলে বন্ধ নাক খুলতে পারে। গরম ভাপ নাকের পথকে আর্দ্র করে তোলে।
স্যালাইন ড্রপ ব্যবহার: ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নাকে স্যালাইন জল ব্যবহার করতে পারেন। এটি নাক পরিষ্কার করার একটি কার্যকর উপায় এবং ড্রপ আকারে পাওয়া যায়।
রাতে শোবার আগে যা করবেন:
মাথা উঁচু করে ঘুমান: রাতে শোবার সময় একটি অতিরিক্ত বালিশ ব্যবহার করে মাথা খানিকটা উঁচু করে রাখুন। এতে শ্বাস নিতে সুবিধা হবে এবং নাক বন্ধ হওয়ার প্রবণতা কমবে।
মেনথল বাম ব্যবহার: বুকে মেনথল বা ইউক্যালিপটাস তেলযুক্ত বাম ঘষে নিতে পারেন। এর শীতলতা বন্ধ নাক খুলতে সাহায্য করতে পারে।
হিউমিডিফায়ার ব্যবহার: যদি ঘরের বাতাস খুব শুষ্ক মনে হয়, তবে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। এটি বাতাসের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং শ্বাস নেওয়া সহজ করে তোলে।
ঘর ঠান্ডা ও অন্ধকার রাখুন: নিজের শোবার ঘর ঠান্ডা ও অন্ধকার রাখুন। এতে ঘুম ভালো হবে এবং পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
এই সহজ টিপসগুলো মেনে চললে বন্ধ নাকের অস্বস্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে এবং রাতে একটি শান্তির ঘুম আশা করা যায়। যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।