বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তুলনা টেনে বিতর্কিত পোস্ট করার অভিযোগে এবার আইনি জালে জড়ালেন বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষ। তৃণমূলের দাবি, মালব্যর এই মন্তব্য স্রেফ বিভ্রান্তিকর নয়, বরং রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের এক সুপরিকল্পিত চক্রান্ত।
কী লিখেছিলেন অমিত মালব্য? সম্প্রতি বাংলাদেশে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও চট্টগ্রামে অস্থিরতা তৈরি হয়। সেই পরিস্থিতির ভিডিও ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে শেয়ার করে মালব্য দাবি করেন, “চরমপন্থাকে প্রশ্রয় দিলে এভাবেই সমাজ ধ্বংস হয়।” এরপরই সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকে বিঁধে তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে, ২০২৬ সালের নির্বাচনের পর এই শাসন চলতে থাকলে বাংলার পরিস্থিতিও বাংলাদেশের মতো “অপরিবর্তনীয়” ও ভয়াবহ হয়ে উঠবে।
তৃণমূলের অভিযোগের তির: তৃণমূল নেতা তন্ময় ঘোষ তাঁর অভিযোগে তিনটি প্রধান বিষয় তুলে ধরেছেন:
বিদেশনীতি লঙ্ঘন: বাংলাদেশের মতো স্পর্শকাতর আন্তর্জাতিক ইস্যুকে বাংলার ভোট রাজনীতির সঙ্গে মিশিয়ে দেশের কূটনৈতিক অবস্থানের ক্ষতি করা হচ্ছে।
সাম্প্রদায়িক উস্কানি: উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করা হয়েছে।
মানহানি: মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
তন্ময় ঘোষ প্রশ্ন তোলেন, “জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবসময় কেন্দ্রের পাশে থাকেন, অথচ মালব্যর মতো নেতারা ‘রাস্তার রাজনীতি’ করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। বিদেশ মন্ত্রক কি এই মন্তব্য সমর্থন করে?”
বিজেপির পালটা চাল: বিজেপি অবশ্য এই অভিযোগকে আমল দিতে নারাজ। গেরুয়া শিবিরের দাবি, ওপার বাংলার ভয়াবহতা তুলে ধরা কোনো অপরাধ নয়। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘বাংলাদেশ ও অনুপ্রবেশ’ ইস্যুকেই যে বিজেপি মূল হাতিয়ার করতে চাইছে, মালব্যর পোস্ট তারই আগাম সঙ্কেত।