‘ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়’—এই প্রবাদকেই যেন সত্যি করে দেখিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি ৩ ব্লকের দেবেন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার যুবক জগন্নাথ খাটুয়া (২৩)। বাবা পেশায় রাজমিস্ত্রি, সামান্য রোজগারেই চলে সংসার। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে নামী আর্ট কলেজে পড়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি জগন্নাথের। তবুও দমে যাননি তিনি। ছোটবেলা থেকে আঁকার প্রতি যে তীব্র আগ্রহ ছিল, তাকেই পুঁজি করে আজ তিনি একজন সফল প্রফেশনাল আর্টিস্ট।
কাঁথির বহলিয়া গ্রামের এই তরুণ প্রথমে স্থানীয় এক দাদার কাছে ছবি আঁকা শেখেন। এরপর বাবার ভাঙাচোরা স্মার্টফোনটিই হয়ে ওঠে তাঁর সবচেয়ে বড় প্রশিক্ষক। ইউটিউব দেখে দেখে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে তোলেন তিনি। বর্তমানে নিজের হাতের জাদুতে দেওয়াল অঙ্কন, ডিজাইন এবং রাজনৈতিক দেওয়াল লিখনের মতো কাজ করে মাসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করছেন।
উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর আর্থিক কারণে আর্ট কলেজে ভর্তি হতে না পারলেও, তিনি এগরা কলেজে থিয়েটার বিভাগে ভর্তি হন। কারণ তিনি জানতেন, সেখানে নাটক চর্চার পাশাপাশি রং-তুলি নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায়। কলেজের অধ্যাপকদের নজরে আসে তাঁর প্রতিভা, এরপর কলেজ জীবনের দেওয়াল থেকেই শুরু হয় তাঁর পেশাদার শিল্পীর পথচলা।
জগন্নাথের এই সাফল্য প্রমাণ করে, কোনও বাধাই তাঁকে থামাতে পারেনি। নিজের প্রবল ইচ্ছেশক্তি ও কঠোর পরিশ্রমের জোরেই তিনি আজ সংসারের আর্থিক অভাব অনেকটাই দূর করতে সক্ষম হয়েছেন। স্থানীয়দের কাছে এখন তিনি ‘জাদু-হাত’ যুক্ত শিল্পী হিসেবে পরিচিত, যা তাঁর জেদ ও প্রতিভারই জয়গান।