পারিবারিক বিবাদ যে এমন বীভৎস রূপ নিতে পারে, তা কল্পনাও করতে পারেনি পুরুলিয়ার বলরামপুর থানার রাঙাডি মোড় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। তুচ্ছ অশান্তিকে কেন্দ্র করে নিজের সহোদরা মূক-বধির দিদিকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল ভাইয়ের বিরুদ্ধে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের পাশাপাশি তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
কী ঘটেছিল সেই অভিশপ্ত দিনে? পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, রাঙাডি গ্রামের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ পালের সঙ্গে তার দিদি জবা পালের দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিবাদ ছিল। জবা পাল জন্ম থেকেই মূক ও বধির ছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে সেই বিবাদ চরমে পৌঁছায়। অভিযোগ, কথা কাটাকাটি চলাকালীন মেজাজ হারিয়ে বোনকে বেধড়ক মারধর শুরু করে গৌরাঙ্গ। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকায় নিজেকে রক্ষা করার বা চিৎকার করে কাউকে ডাকার সুযোগ পাননি জবা। মারের চোটে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
হাসপাতালে নিয়ে গেলেই মৃত্যু: জবা পালকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত বলরামপুর বাঁশগড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এক লহমায় একটি সাজানো পরিবার তছনছ হয়ে যায়।
পুলিশি তৎপরতা: খবর পাওয়ামাত্রই বলরামপুর থানার আইসি অর্ণব গুহর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। অভিযুক্ত ভাই গৌরাঙ্গ পালকে ইতিম্যধ্যেই পুলিশ আটক করেছে। ঘটনার নেপথ্যে প্রকৃত কারণ কী, তা জানতে মৃতার বাবা দুখন পালকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
পারিবারিক সম্পত্তির বিবাদ নাকি অন্য কোনো পুরনো শত্রুতা, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এক মূক-বধির মহিলার এমন করুণ মৃত্যুতে প্রতিবেশীদের চোখে এখন শুধুই জল আর অভিযুক্তের প্রতি ঘৃণা।