সব নথিপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও সরকারি গাফিলতির জেরে চরম ভোগান্তির শিকার এক পরিবার। আধার কার্ড থেকে পুরনো ভোটার কার্ড— সব জায়গাতেই নামের বানান যথাযথ ছিল। কিন্তু ২০২৫-এর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হতেই চক্ষু চড়কগাছ বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিশ্বরূপ গোস্বামীর। পরিবারের চার সদস্যের মধ্যে তিনজনেরই নামের বানান বদলে গিয়েছে আমূল। সংশোধন করতে গিয়ে বিএলও থেকে বিডিও অফিস ছুটলেও মেলেনি কোনও সুরাহা।
কী ঘটেছিল আসলে? বিষ্ণুপুরের শালবাগান এলাকার বাসিন্দা বিশ্বরূপবাবু জানান, স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূকে নিয়ে তাঁর ছোট্ট সংসার। গত বছর পর্যন্ত ভোটার তালিকায় তাঁদের সব তথ্য নির্ভুল ছিল। আসন্ন নির্বাচনের আগে নিয়ম মেনে ‘এসআইআর’ (SIR) প্রক্রিয়ার সময় তিনি নিজের হাতে সঠিক বানানেই গণনা ফর্ম পূরণ করেছিলেন। কিন্তু কমিশনের পোর্টালে খসড়া তালিকা আসতেই দেখা যায়, শুধু ইংরেজি নয়, বাংলা বানানেও রয়েছে বিস্তর গরমিল। পরিবারের পুত্রবধূর নাম ঠিক থাকলেও বিশ্বরূপবাবু এবং তাঁর স্ত্রীর নামের বানানে করা হয়েছে মারাত্মক ভুল।
প্রশাসনের দরজায় হয়রানি: ভুল নজরে আসার পর ষাটোর্ধ্ব বিশ্বরূপবাবু স্থানীয় বিএলও-র (BLO) দ্বারস্থ হন। অভিযোগ, বিএলও সরাসরি জানিয়ে দেন এক্ষেত্রে তাঁর কিছুই করার নেই। এরপর আশাহত হয়ে তিনি ছোটেন বিডিও অফিসে। কিন্তু সেখানেও একই চিত্র! বিডিও-র পক্ষ থেকেও কোনও সদর্থক আশ্বাস মেলেনি বলে দাবি ওই পরিবারের।
ক্ষোভ উগড়ে দিলেন গৃহকর্তা: বিশ্বরূপ গোস্বামী আক্ষেপের সুরে বলেন, “এত বছর ধরে ভোট দিচ্ছি, কোনওদিন এমন সমস্যায় পড়িনি। এসআইআর হওয়ার পরেই সব তালগোল পাকিয়ে গেল। যারা ডাটা এন্ট্রি করছে, তাদের ভুলে আমাদের কেন ভুগতে হবে? বিএলও-বিডিও সবাই হাত ধুয়ে ফেললে আমরা কার কাছে যাব?”
সামনে নির্বাচন, তার আগে পরিচয়পত্রের এই বিভ্রাট নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটছে গোস্বামী পরিবারের। এখন দেখার, নির্বাচন কমিশন বা জেলা প্রশাসন এই ভুল সংশোধনে কোনও সক্রিয় পদক্ষেপ নেয় কি না।