ভোটার কার্ডে বাবা অন্য কেউ! ‘ভুয়ো’ রাজু ও বিশুকে চেনেন না রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস, কীভাবে সাতজনের ফর্ম এল পাঁচজনের পরিবারে?

এসআইআর (SIR) বা সার্ভে, আইডেন্টিফিকেশন, এবং রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াকে ঘিরে রাজনৈতিক দড়ি টানাটানির পাশাপাশি প্রায় প্রতিদিন চমকপ্রদ সব ঘটনা সামনে আসছে। ২৬ বছর পর নিরুদ্দেশ সন্তানের খোঁজ মেলার পর এবার আরও একটি বিস্ময়কর ঘটনা সামনে এল। এসআইআর-এর সৌজন্যে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর এক ব্যক্তি জানতে পারলেন, তাঁর তিন সন্তানের বাইরেও আরও দুই ‘পুত্র’ রয়েছে। এই অপ্রত্যাশিত খবরে উদ্বেগে রয়েছেন বনগাঁর রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস, যিনি দুই ‘অচেনা পুত্রের’ নাম বাদ দিতে বিডিও-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।

তিন থেকে কীভাবে পাঁচ সন্তানের ‘বাবা’ হলেন রবীন্দ্রনাথ? বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভার ১৯১ নম্বর পার্টের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাসের পরিবারে স্ত্রী ও তিন পুত্র—নয়ন বিশ্বাস, অয়ন বিশ্বাস এবং সায়ন বিশ্বাস—সহ মোট পাঁচজন সদস্য। এসআইআর ফর্ম আসার কথা ছিল পাঁচজনেরই। কিন্তু, যখন বিএলও (বুথ লেভেল অফিসার) তাঁর বাড়িতে এসে সাতজনের ফর্ম দেন, তখন তিনি কার্যত চমকে ওঠেন। ফর্ম দেখে রবীন্দ্রনাথ জানতে পারেন যে রাজু বিশ্বাস ও বিশু বিশ্বাস নামে দু’জন ব্যক্তি তাঁকে বাবা দেখিয়ে ভোটার কার্ড করিয়েছেন।

বিষয়টি জানতে পেরে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস গাইঘাটার বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে রাজু ও বিশুর নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, তিনি এই দু’জনকে চেনেন না এবং তাঁরা এই এলাকার বাসিন্দা নন।

রাজনীতির দড়ি টানাটানি: এই চমকপ্রদ ঘটনাটি সামনে আসার পরই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সব্যসাচী ভট্ট বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, “এটা কীভাবে হল, তা নির্বাচন কমিশন বলতে পারবে। ওই এলাকার বিধায়ক বিজেপির এবং পঞ্চায়েত সদস্যও বিজেপির। তাঁরা বলতে পারবেন কীভাবে এটা হল।”

পাল্টা জবাব দিয়েছেন বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার। তিনি বলেন, “বাংলায় দীর্ঘদিন তৃণমূল ক্ষমতায় রয়েছে। তৃণমূলের দালালরা বিভিন্ন অফিসের সামনে থাকে। তারা টাকার বিনিময়ে ভুয়ো বাবা বানিয়ে এই ভোটার কার্ডগুলি করেছিল। এবার এসআইআর হওয়ার ফলে তা ধরা পড়ছে।”

বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন গাইঘাটার বিডিও নীলাদ্রি সরকার।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy