বিহার নির্বাচন- চূড়ান্ত আসন সমঝোতা এনডিএ-তে, সমানে সমানে বিজেপি-জেডিইউ; জোটের উপর কেন বাড়ছে বিজেপির প্রভাব?

আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনের জন্য ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (NDA) দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করেছে। এইবারের সমঝোতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) এবং জনতা দল (ইউনাইটেড) [JDU] উভয়েই ১০১টি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, যা জোটের ইতিহাসে প্রথম। বাকি ৪১টি আসন এনডিএ-এর ছোট শরিকদের মধ্যে ভাগ করা হয়েছে।

এই সমঝোতা অনুযায়ী:

  • বিজেপি: ১০১টি আসন
  • জেডিইউ: ১০১টি আসন
  • লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস) [চিরাগ পাসওয়ান]: ২৯টি আসন
  • হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (হাম) [জিতন রাম মাঞ্জি]: ৬টি আসন
  • রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চা (আরএলএম) [উপেন্দ্র কুশওয়াহা]: ৬টি আসন

 

২০০৫ থেকে জোট রাজনীতিতে বিজেপির ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব

 

২০০৫ সালে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে এনডিএ সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকে বিহারের রাজনীতিতে বিজেপির প্রভাব ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এইবারের সমসংখ্যক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সেই উত্থানেরই ইঙ্গিত বহন করছে।

  • ২০০৫ নির্বাচন: বিজেপি ১০২টি আসনে লড়ে ৫৫টিতে জেতে (স্ট্রাইক রেট ৫৩%)। জেডিইউ ১৩৯টি আসনে লড়ে ৮৮টিতে জেতে।
  • ২০১০ নির্বাচন (এনডিএ-এর সেরা ফল): বিজেপি ১০২টি আসনে লড়ে ৯১টি আসনে জয় পায় (স্ট্রাইক রেট ৮৯%), আর জেডিইউ ১৪১টি আসনে লড়ে ১১৫টিতে জেতে।

২০১০ সালের এই ভূমিধস বিজয়ের পিছনে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন প্রথম মেয়াদের ‘গোল্ডেন ফেজ’-এর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তবে, ২০১৩ সালে নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণার পর নীতীশ কুমার এনডিএ জোট ছাড়েন।

 

২০২০-এর ফলাফল এবং চিরাগের ভূমিকা

 

২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি যেখানে ১১০টি আসনে লড়ে ৭৪টি আসনে জয়ী হয়ে (স্ট্রাইক রেট ৬৭%) জোটের মধ্যে শক্তিশালী শরিক হিসেবে উঠে আসে, সেখানে জেডিইউ ১১৫টি আসনে লড়ে মাত্র ৪৩টি আসন জেতে। এই ভরাডুবির জন্য নীতীশ কুমার চিরাগ পাসওয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (LJP)-কে দায়ী করেন, যারা জেডিইউ-এর একাধিক আসনে প্রার্থী দিয়ে ভোট ভাগ করেছিল।

এইবারে চিরাগ পাসওয়ানের দল এনডিএ-এর অংশ হওয়ায় সেই ‘ভোট কাটার’ ফ্যাক্টরটি আর থাকছে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিহারের নির্বাচন এবার এনডিএ বনাম আরজেডি নেতৃত্বাধীন মহাজোট-এর মধ্যে একটি কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিকে এগোচ্ছে। প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজ পার্টি এবং আসাদউদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএম-এর মতো অন্যান্য দলগুলিও কয়েকটি আসনে ফয়সালাকারী ভূমিকা নিতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy