ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে সাসপেন্ড করল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে দলের সিদ্ধান্তের কথা জানান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সাসপেন্ডের কারণ হিসেবে তৃণমূল সরাসরি বাবরি মসজিদ নির্মাণ সংক্রান্ত তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যকে দায়ী করেছে।
তৃণমূলের দাবি: ‘বিজেপি-র চক্রান্ত’
ফিরহাদ হাকিম স্পষ্ট জানান, দল হুমায়ুনের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবে না। তিনি অভিযোগ করেন, হুমায়ুন কবীর সংহতি দিবসের ঠিক আগে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ‘বাবরি মসজিদ’-এর শিলান্যাস করার ঘোষণা করে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছেন।
ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য:
“উনি বাবরি মসজিদ করার কথা বলে বাবরি ধ্বংসের স্মৃতি উসকে দিতে চাইছেন। এর পিছনে আমরা মনে করি বিজেপি রয়েছে।”
“ওরা হুমায়ুনকে সামনে রেখে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের রাজনীতি করছে।”
“দেশের মানুষ বাংলার মানুষ কি শুধু এইসব ধর্মান্ধতা নিয়েই থাকবে? এগিয়ে যাবে না?”
হুমায়ুন কবীরের এই মন্তব্যের ফলে হাইকোর্টে মামলাও হয়েছে।
শুভেন্দু অধিকারীর চাঞ্চল্যকর প্রশ্ন: তৃণমূলের ‘উস্কানি’ নয় তো?
তৃণমূল বিধায়ক সাসপেন্ড হওয়ার পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি এই ঘটনায় তৃণমূলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। শুভেন্দু অধিকারী এর আগে থেকেই হুমায়ুন কবীরের এই মন্তব্য নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছিলেন এবং কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে তদন্তের আর্জি জানিয়েছিলেন।
শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের মূল সুর:
তিনি সাসপেনশন প্রসঙ্গে সরাসরি কোনো বক্তব্য না রাখলেও প্রশ্ন তুলেছেন, “বেলডাঙায় শিলান্যাস হতে চলা বাবরি মসজিদের নেপথ্যে তৃণমূলেরই হাত নেই তো?”
তিনি অভিযোগ করেন, হুমায়ুন কবীর মুর্শিদাবাদে শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছেন, যা ওই জেলায় সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
বিরোধী দলনেতা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তদন্ত করার আহ্বান জানান যে হুমায়ুন কবীর সম্প্রতি বাংলাদেশে গিয়েছিলেন কি না। তিনি আশঙ্কা করেন, সীমান্তের ওপার থেকে উগ্রপন্থীরা ডিসেম্বরে মুর্শিদাবাদে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ করার চেষ্টা করতে পারে।
শুভেন্দু অধিকারী হুমায়ুনের মন্তব্যকে সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতি চরম অসম্মান বলেও দাবি করেন।
হুমায়ুন কবীর অবশ্য তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব না দিয়ে উল্টে ঘোষণা করেছেন, তিনি আগামী ২২ ডিসেম্বরই নতুন দল ঘোষণা করবেন।