বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া এবং হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হচ্ছে, যা নিয়ে চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন দেশের লক্ষ লক্ষ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীরা। ওই বার্তায় দাবি করা হচ্ছে, ‘অর্থ আইন ২০২৫’-এর মাধ্যমে সরকার পেনশনভোগীদের মহার্ঘ্য ভাতা (DA) এবং অষ্টম বেতন কমিশনের মতো সমস্ত আর্থিক সুবিধা বাতিল করতে চলেছে। কিন্তু সরকারি তদন্তে উঠে এল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক চিত্র।
ভাইরাল বার্তায় কী দাবি করা হচ্ছে?
হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়া ওই বার্তায় বলা হয়েছে:
২০২৫ সাল থেকে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা আর কোনো ডিএ বৃদ্ধির সুবিধা পাবেন না।
প্রস্তাবিত অষ্টম বেতন কমিশন বা ভবিষ্যতের কোনো বেতন কমিশনের সুবিধা পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
এই সিদ্ধান্তের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কোটি কোটি প্রবীণ নাগরিক।
ফ্যাক্ট-চেক: কী বলছে পিআইবি (PIB)?
কেন্দ্রীয় সরকারের সরকারি তথ্য সংস্থা প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর (PIB) ফ্যাক্ট-চেকিং ইউনিট এই দাবিটিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে ঘোষণা করেছে। পিআইবি-র স্পষ্ট বক্তব্য: ১. ২০২৫ সালের অর্থ আইনে পেনশনভোগীদের সুবিধা কমানোর কোনো বিধান নেই। ২. আগের মতোই পেনশনভোগীরা নিয়মিত ডিএ বৃদ্ধির সুবিধা পাবেন। ৩. অষ্টম বেতন কমিশন কার্যকর হলে তার সুফল কর্মচারী ও পেনশনভোগী— উভয় পক্ষই পাবেন।
তদন্তে দেখা গিয়েছে, সিসিএস (পেনশন) বিধি ২০২১-এর ৩৭ নম্বর নিয়ম সংশোধন নিয়ে ভুল ব্যাখ্যার কারণেই এই বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। আসল সত্যটি হলো:
এই নিয়মটি কেবল সেই কর্মচারীদের জন্য, যারা কোনো পাবলিক সেক্টর আন্ডারটেকিং (PSU)-তে স্থানান্তরিত হয়েছেন।
যদি তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো গুরুতর অসদাচরণ প্রমাণিত হয়, তবেই কিছু অবসরকালীন সুবিধা স্থগিত করা হতে পারে।
সাধারণ পেনশনভোগীদের ডিএ বা বেতন কমিশনের সাথে এই নিয়মের কোনো দূরতম সম্পর্কও নেই।
উপসংহার
সরকার ডিএ বৃদ্ধি বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা করেনি। যখনই নতুন বেতন কমিশন কার্যকর হয়, তার সুফল বিদ্যমান কর্মচারী ও পেনশনভোগী উভয়েই পেয়ে থাকেন। তাই এই ধরণের কোনো বিভ্রান্তিকর বার্তায় কান না দেওয়ার এবং তা ফরওয়ার্ড না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে প্রশাসনিক স্তরে।