অপেক্ষার আর মাত্র কয়েকটা দিন, তারপরই নতুন বছরের ক্যালেন্ডারে পড়বে প্রথম দিনটি। বড়দিন থেকে ইংরেজি নববর্ষ— উৎসবের জোয়ারে গা ভাসিয়েছে গোটা বাংলা। শহর কলকাতা থেকে শুরু করে রাজ্যের প্রান্তিক জেলাগুলিও এখন আলোর মালায় সেজে উঠেছে। তবে আলোকসজ্জার দিক থেকে এবার নজর কেড়েছে রাঢ় বঙ্গের প্রবেশদ্বার পুরুলিয়া। বিশেষ করে শহরের ভাটবাঁধ এলাকা যেন হয়ে উঠেছে ‘মিনি পার্ক স্ট্রিট’।
বিগত দুই দশক ধরে এক অনন্য ঐতিহ্য বহন করে চলেছে পুরুলিয়ার ভাটবাঁধ এলাকা। বড়দিন আসার আগে থেকেই এই এলাকাটিকে সাজিয়ে তোলা হয় পার্ক স্ট্রিটের আদলে। কয়েক হাজার খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী মানুষের বাস এই অঞ্চলে। ভাটবাঁধ খ্রিস্টান কমিউনিটির উদ্যোগে আয়োজিত এই উৎসবের রোশনাই দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকাবাসীর দাবি, বড়দিনের আনন্দ উপভোগ করতে আর কলকাতায় যাওয়ার প্রয়োজন হয় না, কারণ ঘরের কাছেই মিলছে তিলোত্তমার সেই চেনা আমেজ।
আয়োজকদের অন্যতম সদস্য সরজিৎ সামিয়ন জানান, “গত ২০ বছর ধরে আমরা একইভাবে বড়দিন ও নববর্ষ উদযাপন করে আসছি। ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা অনুষ্ঠান চলে। প্রভু যীশুর জন্মদিন পালন এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আমরা এলাকাটিকে বর্ণিল আলোকসজ্জায় সাজিয়ে তুলি।” ভাটবাঁধের রাস্তায় নীল-সাদা আলোর কারিকুরি আর মানুষের উৎসাহ যেন পার্ক স্ট্রিটের সেই পরিচিত স্মৃতিই মনে করিয়ে দিচ্ছে।
এলাকার যুবক শ্যামল কাশ্যপ উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, “উৎসবের এই কদিন আমাদের পাড়াটা পুরো বদলে যায়। কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে যেমন ধুমধাম হয়, আমাদের এখানেও ঠিক তাই। পুরুলিয়ার বুকে এক টুকরো পার্ক স্ট্রিট গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য ছিল, যা আজ সফল।” শীতের রাতে কেক, গান আর আলোর উৎসবে এখন পুরুলিয়ার ভাটবাঁধ যেন এক রূপকথার দেশ। বড়দিনের ছুটি আর নতুন বছরের প্ল্যান নিয়ে পুরুলিয়াবাসীর গন্তব্য এখন এই আলোকোজ্জ্বল ভাটবাঁধ।