নিউটাউনে প্রস্তাবিত ‘দুর্গা অঙ্গন’ প্রকল্পের শিলান্যাসকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্কের বারুদ মজুত হলো। একদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পকে রাজ্যের সংস্কৃতি ও অর্থনীতির মাইলফলক হিসেবে দাবি করেছেন, অন্যদিকে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ একে ‘ভোটের রাজনীতি’ বলে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। শিলান্যাসের দিনেই এই প্রকল্পকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
শিলান্যাস অনুষ্ঠান সম্পন্ন হতেই সুর চড়ান বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, হিন্দু ভোট ব্যাংককে তুষ্ট করতেই এই দুর্গা মন্দির বা অঙ্গন তৈরি করা হচ্ছে। তিনি আরও দাবি করেন, একদিকে যখন মন্দির হচ্ছে, তখন মুসলিম ভোট নিশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হুমায়ুন কবিরকে দিয়ে বাবরি মসজিদ তৈরির কথা বলানো হচ্ছে। এছাড়া এই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ এবং ক্ষতিপূরণ নিয়ে আইনি জট ও মামলার প্রসঙ্গ তুলে সরকারকে বিঁধেছেন তিনি।
পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রীও। শিলান্যাস মঞ্চ থেকেই বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি জানান, তাঁর সরকার ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী। মমতা বলেন, “অনেকে একে তুষ্টিকরণ বলেন, কিন্তু আমি সব ধর্মের মানুষের পাশেই দাঁড়াই। ধর্ম ব্যক্তিগত, কিন্তু উৎসব সবার।” এদিন তিনি গঙ্গাসাগর মেলার প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেন। তাঁর আক্ষেপ, কুম্ভমেলায় সব ব্যবস্থা থাকলেও গঙ্গাসাগরের জন্য কেন্দ্র কোনো সাহায্য করেনি। তবে ৫ জানুয়ারি থেকেই গঙ্গাসাগর সেতুর কাজ শুরু হবে এবং দুই বছরের মধ্যে তা সম্পন্ন হবে বলে তিনি ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, প্রায় ২ লক্ষ বর্গফুট এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা এই ‘দুর্গা অঙ্গন’ হবে বিশ্বের বৃহত্তম। ৫৪ মিটার উঁচু এই স্থাপত্যে ১০৮টি দেবদেবীর মূর্তি এবং ৬৪টি সিংহমূর্তি থাকবে। ১২ একরের বেশি জমিতে বিস্তৃত এই চত্বরে ১০০০ মানুষ থাকতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যে পর্যটন ও কর্মসংস্থান দুই-ই বৃদ্ধি পাবে। ইউনেস্কোর হেরিটেজ স্বীকৃতির পর এই উদ্যোগ বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবকে সারা বিশ্বজুড়ে আরও পরিচিতি দেবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।