তৃণমূলের অন্দরে ফের বিদ্রোহ! SIR থেকে ওয়াকফ: নিজের দলের বিরুদ্ধেই হুঁশিয়ারি দিলেন বিধায়ক হুমায়ুন কবীর

রাজ্যের রাজনৈতিক অন্দরে ফের চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর এবার সরাসরি নিজের দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন। SIR (Special Integrated Revision) এবং ওয়াকফ—এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তীব্র সমালোচনা করেছেন, যা ফের একবার দলের অন্দরে বড় ধরনের অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে।

SIR নিয়ে সরাসরি বিঁধলেন তৃণমূলকে:

SIR প্রক্রিয়া নিয়ে সরকারের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে হুমায়ুন কবীর বলেন, “প্রথম থেকে তো বলছিল, SIR করতে দেব না। সেই এসআইআর তো ৪ নভেম্বর থেকে পুরোদমে চলছে। বিএলও তো এই রাজ্য সরকারের কর্মচারীই।” যদিও তিনি মনে করেন যে, একজন ভোটারের নাম দু’জায়গায় থাকলে ক্ষতি নেই, কিন্তু বিজেপি এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে মানুষকে ‘বাংলাদেশ পাঠিয়ে দেওয়ার’ ভয় দেখাচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

ওয়াকফ নিয়ে আরও কড়া হুঁশিয়ারি:

শুধু SIR নয়, ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়েও তৃণমূলকে একহাত নেন ভরতপুরের বিধায়ক। তিনি অভিযোগ করেন, “কিছু BLRO (Block Land and Land Reforms Officer) ওয়াকফ সম্পত্তিকে সরকারি জমি করে দিচ্ছে। তার খেসারত সরকারকেই গুনতে হবে।” সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি নিয়ে কঠোর বার্তা দিয়ে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “সংখ্যালঘুরা নিজেরাই জানেন তাঁদের সম্পত্তি কীভাবে রক্ষা করতে হয়। জেহাদ করে, সংগ্রাম করে জমি রক্ষা করবে। মুসলিমদের সম্পত্তিতে হাত দেওয়া যাবে না।” হুমায়ুনের দাবি, কিছু BLRO হঠাৎ মুসলিমদের জমিকে ১ নম্বর খতিয়ানে নিয়ে যাচ্ছে, যার রাজনৈতিক মূল্য রাজ্য সরকারকে আসন্ন ভোটবাক্সেই চুকোতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন:

উল্লেখ্য, সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতা করে তৃণমূল এর আগে সংসদে তীব্র প্রতিবাদ করেছিল। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিক সভা থেকে স্পষ্ট করেছিলেন, এই আইন বাংলায় কার্যকর হতে দেবেন না। কিন্তু বৃহস্পতিবার সংখ্যালঘু বিষয়ক দপ্তর সব জেলাশাসককে নির্দেশ পাঠায় যে, ওয়াকফ সম্পত্তির তথ্য কেন্দ্রীয় ‘উমিদ’ (UMID) পোর্টালে নথিভুক্ত করতে হবে। এই সিদ্ধান্তের পরেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী, তৃণমূল নেত্রীর ‘দ্বিচারিতা’ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন।

হুমায়ুন কবীরের এই মন্তব্য ফের প্রমাণ করল, দলের অন্দরে শৃঙ্খলা বজায় রাখা কঠিন হচ্ছে। এর আগেও নানা ইস্যুতে দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তাঁকে শোকজের মুখে পড়তে হয়েছিল।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy