তমলুকে ২ মাসের শিশুর মৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার! ICU না দেওয়ায় গাফিলতির অভিযোগ, বিক্ষোভ সামাল দিল পুলিশ

পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে নিউমোনিয়া আক্রান্ত দুই মাসের এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার দিনভর চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সকালে নিউমোনিয়ার গুরুতর সমস্যা নিয়ে শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যা গড়াতেই তার মৃত্যু হয়। এর পরই চিকিৎসার ক্ষেত্রে গুরুতর গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা, যার জেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

পরিবারের অভিযোগ: কেন দেওয়া হলো না ICU?

মৃত শিশুর পরিবারের দাবি, শিশুটির অবস্থা গুরুতর জেনেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে আইসিইউ (ICU) বা বিশেষ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করেনি। বরং সাধারণ বেডেই রাখা হয়। শিশুটির মা অভিযোগ করেন, “দুপুরের দিকে ওর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাচ্ছিল, শরীর ঘামছিল। আমরা বারবার নার্সদের ডাকি, কিন্তু কেউ আসেনি। যখন একজন নার্স আসে, তখন বাচ্চাটা আর বেঁচে নেই।” তাঁর দাবি, সময়মতো চিকিৎসা পেলে শিশুটিকে বাঁচানো যেত।

চিকিৎসার নথি নিয়ে টালবাহানা, পরিস্থিতি উত্তপ্ত

এই অভিযোগের পরেই নার্সিং হোমের ভেতরে এবং বাইরে বিক্ষোভ শুরু হয়। আত্মীয়-স্বজনরা হাসপাতালের গেটে ভিড় জমান। বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ আড়াল করার চেষ্টা করছে এবং চিকিৎসার নথি স্বচ্ছভাবে দিতে অনীহা দেখাচ্ছে। পরিস্থিতির জেরে তমলুক শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় তমলুক থানার পুলিশ। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে আলোচনার পর পুলিশ বিক্ষোভ সামলে পরিস্থিতি শান্ত করতে সক্ষম হয়। যদিও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মৃত শিশুর পরিবারের তরফে কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

অন্যদিকে, নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। হাসপাতালের এক প্রশাসনিক আধিকারিক দাবি করেন, “শিশুটিকে অত্যন্ত গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসকেরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। গাফিলতির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, তমলুকে মানসম্মত চিকিৎসা পরিষেবার অভাব রয়েছে এবং বেসরকারি নার্সিং হোমগুলির তদারকি না হওয়ায় এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। সূত্রের খবর, জেলা স্বাস্থ্য দফতর এই মর্মান্তিক ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠাতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy