জঙ্গলমহল জুড়ে ফের বাড়ছে সাপের আতঙ্ক। চন্দ্রকোনা ও আশেপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় হঠাৎই চন্দ্রবোড়া সাপের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ। সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনাও নজরে আসছে। জঙ্গলের ধারে বসবাসকারী মানুষ থেকে শুরু করে মাঠে কাজ করা কৃষকেরা—সবাই এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন, কারণ রাত বাড়লেই বাড়ির আঙিনা, খেতখামার, কিংবা মাটির ঘরের কোণে দেখা মিলছে বিষধর সাপের।
‘সর্পবন্ধু’ মলয় ঘোষের উদ্যোগ:
এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন চন্দ্রকোনার বাসিন্দা মলয় ঘোষ। পেশায় অভিজ্ঞ সাপ উদ্ধারকারী এবং ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউয়ার টিমের সক্রিয় সদস্য হিসেবে পরিচিত মলয় ঘোষ, সাপ দেখার খবর পেলেই ছুটে যান ঘটনাস্থলে। জঙ্গল, গ্রাম, বাড়ি বা দোকান—যেখানেই সাপ ঢুকে পড়ে সেখানেই ডাক পড়ে তাঁর। স্থানীয়রা তাকে ‘সর্পবন্ধু’ নামেই চেনেন। তিনি ইতিমধ্যেই হাজার হাজার সাপ উদ্ধার করে অসংখ্য মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন এবং উদ্ধার করা সাপ নিরাপদে বনদফতরের মাধ্যমে আবার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য।
মলয় ঘোষের একটাই উদ্দেশ্য: মানুষ এবং সাপ দু’জনকেই বাঁচানো।
সচেতনতাই একমাত্র অস্ত্র:
সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় মলয় ঘোষ সচেতনতাকেই একমাত্র অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তিনি এই বার্তা নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন জঙ্গলমহলের স্কুলে স্কুলে এবং গ্রাম থেকে গ্রামে। সচেতনতা কর্মসূচিতে তিনি প্রধানত এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করছেন:
সাপে কামড়ানো রোধ: কী করলে সাপে কামড়ানো রোধ করা যায়।
সাপ দেখলে করণীয়: সাপ দেখলে কী করবেন এবং কী করবেন না।
জরুরি চিকিৎসা: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সাপ কামড়ালে ওঝা বা গুনিনের কাছে না গিয়ে দ্রুত সরকারি হাসপাতালে সাপের অ্যান্টিভেনম নেওয়াই একমাত্র সঠিক চিকিৎসা। সময় নষ্ট করলে প্রাণহানি বাড়তে পারে।
মলয় ঘোষের এই উদ্যোগে বহু মানুষ এখন সচেতন হচ্ছেন, গ্রামাঞ্চলে কমছে কুসংস্কার এবং বাড়ছে নিরাপত্তাবোধ।