জইশ-ই-মহম্মদের মহিলা শাখায় ৫,০০০-এর বেশি মহিলা সদস্য নিয়োগ; জেলা ইউনিট স্থাপনের ঘোষণা মাসুদ আজহারের

জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ (JeM) সম্প্রতি জামাত উল মোমিনাত (Jamaat ul Mominaat) নামে তাদের নবগঠিত মহিলা শাখায় ব্যাপক সদস্য নিয়োগ করে নিরাপত্তা সংস্থাগুলির উদ্বেগ বাড়িয়েছে। জইশ প্রধান মাসুদ আজহার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দাবি করেছে যে, নিয়োগ শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই শাখায় ৫,০০০-এর বেশি মহিলাকে সন্ত্রাসবাদের দিকে আকৃষ্ট করে নিয়োগ করা হয়েছে।

সদস্য সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় মাসুদ আজহার এটিকে ‘ঈশ্বরের আশীর্বাদ’ বলে উল্লেখ করে জানিয়েছে, এবার তাদের জেলা পর্যায়ে সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। আজহার লেখে, “জেলা ইউনিট গঠন করা হবে, প্রতিটি জেলার জন্য একজন মুন্তাজিমা (প্রধান) থাকবেন, কাজ ভাগ করে দেওয়া হবে। অল্প সময়ে ৫,০০০ সদস্য।”

গত ৮ অক্টোবর জইশের সদর দফতর মারকাজ উসমান-ও-আলিতে জামাত উল মোমিনাতের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। পাকিস্তান-ভিত্তিক বাহওয়ালপুর, মুলতান, শিয়ালকোট, করাচি, মুজাফফরাবাদ এবং কোটলি থেকে প্রধানত মহিলাদের এই সংগঠনে নিয়োগ করা হয়েছে।

নেতৃত্বে মাসুদ আজহারের বোন, নজর ফিদাইন হামলায়:

এই মহিলা শাখার নেতৃত্ব দিচ্ছে মাসুদ আজহারের বোন সাদিয়া, যে পহেলগাম জঙ্গি হামলায় নিহত ইউসুফ আজহারের স্ত্রী। পুলওয়ামা হামলার মূল পরিকল্পনাকারী উমর ফারুকের স্ত্রী আফিরাও এই মহিলা শাখার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ।

সংগঠনটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, মহিলাদের অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এবং এই ৪০ মিনিটের অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার জন্য প্রত্যেককে ৫০০ টাকা ফি দিতে হচ্ছে। গোয়েন্দাদের ইঙ্গিত, আইএস, হামাস এবং এলটিটিই-এর ধাঁচে ভারতে ফিদাইন (আত্মঘাতী) হামলা চালানোর জন্য এই মহিলা স্কোয়াডকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

গত মাসে দিল্লি বিস্ফোরণে ১৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পরেই জামাত উল মোমিনাত নজরে আসে। দিল্লির কাছে ফরিদাবাদ থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধারের পর গ্রেফতার হওয়া ডঃ শাহীন সঈদের সঙ্গে এই জঙ্গি গোষ্ঠীর যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

সংগঠন শুরুর সময় আজহার বলেছিল, এই মহিলা সদস্যদের জইশের পুরুষ সদস্যদের মতোই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পুরুষ সদস্যরা ১৫ দিনের ‘দাওরা-এ-তরবিয়াত’ কোর্সে অংশ নেয়, আর মহিলারা ‘দাওরা-এ-তাজকিয়া’ নামক একটি ইন্ডাকশন কোর্সে অংশ নেবে। আজহার এই ব্রিগেডে যোগ দেওয়া মহিলাদের জন্য কঠোর নিয়মও আরোপ করেছে। এর মধ্যে একটি হল, স্বামী বা নিকটাত্মীয় ছাড়া অন্য কোনও পুরুষের সঙ্গে ফোনে বা মেসেঞ্জারে কথা বলা যাবে না।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy