২০২৫ সালে ইন্টারনেটে সবচেয়ে বেশি চর্চিত এবং অনুসন্ধান করা বিষয়ের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে একটি ভাইরাসের নাম— HMPV। আচমকা এই ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জনমনে প্রশ্ন জেগেছে, এটি কি করোনার মতো নতুন কোনো অতিমারি? নাকি সাধারণ ঋতু পরিবর্তনের সংক্রমণ? সাধারণ মানুষের বিভ্রান্তি দূর করতে এই ভাইরাসের খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া জরুরি।
HMPV আসলে কী? আতঙ্কিত হওয়ার আগে জেনে রাখা ভালো যে, HMPV বা হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাস কোনো নতুন ভাইরাস নয়। বিজ্ঞানীরা ২০০১ সালেই এটি আবিষ্কার করেছিলেন। এটি মূলত শ্বাসযন্ত্রের একটি সাধারণ ভাইরাস, যা প্রতি বছর শীত ও বসন্তকালে সক্রিয় হয়। তবে ২০২৫ সালে এর সংক্রমণের হার গত কয়েক বছরের তুলনায় অনেকটা বেশি হওয়ায় এটি আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।
লক্ষণ ও উপসর্গ: HMPV-এর লক্ষণগুলি অনেকটা ইনফ্লুয়েঞ্জা বা করোনার মতোই। সংক্রমণের ৩ থেকে ৬ দিন পর সাধারণত নিচের লক্ষণগুলি দেখা দেয়:
প্রচণ্ড কাশি ও গলা ব্যথা।
হালকা থেকে উচ্চ জ্বর।
নাক দিয়ে জল পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া।
শ্বাসকষ্ট (বিশেষত শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে)।
কীভাবে ছড়ায় ও কারা ঝুঁকিতে? এই ভাইরাসটি কোভিড-১৯-এর মতোই বাতাসের মাধ্যমে (হাঁচি-কাশি), সরাসরি সংস্পর্শ বা সংক্রমিত কোনো বস্তু স্পর্শ করার মাধ্যমে দ্রুত ছড়াতে পারে। সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি কয়েক দিনে সেরে গেলেও ৫ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণদের ক্ষেত্রে এটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষ করে যাদের হাঁপানি বা ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে, তাদের বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা: বর্তমানে এই ভাইরাসের কোনো নির্দিষ্ট টিকা বা বিশেষ ওষুধ নেই। তবে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, প্রচুর জল পান এবং সাধারণ জ্বরের ওষুধের মাধ্যমেই বাড়িতে থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব। প্রতিরোধের সেরা উপায় হলো নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং অসুস্থ ব্যক্তির থেকে দূরত্ব বজায় রাখা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, HMPV নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই, তবে সচেতন থাকা জরুরি। যদি শ্বাসকষ্ট তীব্র হয়, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।