কিডনি স্টোন হলে বিয়ার খাওয়া কি ভালো? ডাক্তাররা কেন বলছেন ‘না’, জানুন আসল সত্যি

সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে কিডনি স্টোন বা বৃক্কে পাথর জমার প্রবণতা বৃদ্ধি একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোট আকারের কিডনি স্টোন অনেক সময় প্রাকৃতিকভাবে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে, এবং ডাক্তাররা এই প্রক্রিয়ায় সাহায্য করার জন্য প্রচুর জল পানের পরামর্শ দেন।

তবে একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে যে বিয়ার পান করলে কিডনি স্টোন বেরিয়ে যায় বা বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। এটি অনেকেই ঘরোয়া টোটকা হিসেবে ব্যবহার করেন, কিন্তু এর মধ্যে কি কোনো সত্যতা আছে? নয়া দিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ অমরেন্দ্র পাঠক নিউজ১৮-এর কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন।

কিডনি স্টোন এবং জলের ভূমিকা
ডাঃ পাঠক ব্যাখ্যা করেছেন যে, ক্যালসিয়াম, অক্সালেট এবং ইউরিক অ্যাসিডের মতো খনিজ পদার্থ কিডনিতে জমা হয়ে ছোট স্ফটিক তৈরি করলে কিডনি স্টোন তৈরি হয়। এই স্ফটিকগুলো বড় হতে পারে এবং মূত্রনালীতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে জ্বালা, ব্যথা বা প্রস্রাবে রক্তের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

ছোট পাথর (সাধারণত ৫ মিমি বা তার চেয়ে ছোট) প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে, তবে বড় পাথরগুলোর জন্য প্রায়শই অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। প্রচুর জল পান করার পরামর্শ দেওয়া হয় কারণ এটি প্রস্রাবকে পাতলা করে এবং পাথর বেরোনোর প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে।

বিয়ার নিয়ে চিকিৎসকের সতর্কতা
বিয়ার পান করলে কিডনি স্টোন বেরিয়ে যায়—এই ধারণা প্রসঙ্গে ডাঃ পাঠক স্পষ্ট করে বলেন যে, বিয়ারের মধ্যে এমন কোনো উপাদান নেই যা কিডনি স্টোন বার করে দিতে সাহায্য করে।

বিয়ার একটি মূত্রবর্ধক (Diuretic) হিসেবে কাজ করে, অর্থাৎ এটি প্রস্রাবের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। তবে, এর মানে এই নয় যে পাথর বেরিয়ে যাবেই। ডাঃ পাঠক বলেন, একই প্রভাব লেবুর জল বা সাধারণ জল পান করেও পাওয়া যেতে পারে।

কিডনি স্টোন আক্রান্ত রোগীদের বিয়ার পান করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। ডাঃ পাঠক জোর দিয়ে বলেছেন যে বিয়ারে অ্যালকোহল থাকে, যা শরীরের ক্ষতি করতে পারে এবং আসক্তি তৈরি করতে পারে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বিয়ার পানের ফলে প্রস্রাবের উৎপাদন বাড়লে পাথরটি কিডনির মধ্যে জমা হতে পারে, যার ফলে কিডনিতে ফোলাভাব সৃষ্টি হতে পারে। তাই কিডনি স্টোন থাকলে বিয়ার পান করা একেবারেই উচিত নয়। উপরন্তু, বিয়ার ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে এবং লিভারের সমস্যা বাড়িয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy