‘ওষুধ লাগবে?’ ডাক্তারির পর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ! ধর্ষণের শিকার তরুণী, গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত ছাত্র

পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ওড়িয়া ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সহপাঠীকে ধর্ষণের (Rape) অভিযোগ উঠল। জানা গিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর (দুর্গাপুর কাণ্ডের দিনেই) দক্ষিণ বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পুরুষ শৌচাগারে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ষষ্ঠ সেমিস্টারের পড়ুয়া জীবন গৌদা (২১) নামক এক তরুণের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

সপ্তম সেমিস্টারের পড়ুয়া নির্যাতিতা ঘটনার পাঁচ দিন পর, ১৫ অক্টোবর পুলিশি অভিযোগ দায়ের করেন। বুধবার অভিযুক্ত ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এফআইআর অনুসারে, তরুণের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS) এর ধারা ৬৪ (ধর্ষণের শাস্তি)-এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ধর্ষণের পর অভিযুক্তের প্রশ্ন: ‘ওষুধ লাগবে?’
জানা গিয়েছে অভিযুক্ত তরুণ নির্যাতিতার পূর্বপরিচিত। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারায় সে নির্যাতিতার সঙ্গে একই ক্লাসে পড়ত।

ঘটনার বিবরণ: ঘটনার দিন তরুণী জীবন গৌদার কাছে কিছু জিনিস নিতে গিয়েছিলেন। দুপুরের খাবারের বিরতির সময়, গৌদা তাঁকে বারবার ফোন করে কলেজের সপ্তম তলায় আর্কিটেকচার ব্লকের কাছে দেখা করতে বলে। তরুণী সেখানে পৌঁছালে গৌদা তাঁকে জোর করে চুম্বন করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।

ধর্ষণ: তরুণী লিফটে করে নেমে যাওয়ার চেষ্টা করলে অভিযুক্ত পড়ুয়া তাঁকে ষষ্ঠ তলায় ধরে ফেলে এবং পুরুষদের শৌচাগারে টেনে নিয়ে যায় এবং যৌন নির্যাতন করে।

এফআইআর-এ সময়: ১০ অক্টোবর দুপুর ১.৩০ থেকে ১.৫০ এর মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে বলে এফআইআরে উল্লেখ করা হয়। নির্যাতনের সময় তরুণীর মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

ঘটনার পর নির্যাতিতা তাঁর দুই বন্ধুকে জানান। এমনকি জীবন গৌদা তাঁকে “ওষুধ লাগবে?” কিনা জিজ্ঞেস করে বলেও অভিযোগ। প্রথমে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে দ্বিধা বোধ করলেও পরে সাহস জুগিয়ে তিনি ১৫ অক্টোবর বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে হনুমাননগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পুনর্গঠন করে সিসিটিভি ফুটেজ, ফরেন্সিক এবং ডিজিটাল তথ্য সংগ্রহ করেছে।

কর্ণাটক সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপির তোপ
পশ্চিমবঙ্গের পর আরও এক বিরোধী শাসিত রাজ্যে কলেজ ক্যাম্পাসে ধর্ষণের ঘটনায় ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। শাসকদল কংগ্রেসকে তুলোধোনা করছে গেরুয়া শিবির। কর্ণাটক বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আর অশোক সমাজমাধ্যমের একটি পোস্টে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন:

“কর্ণাটকের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। মাত্র চার মাসে, মেয়েদের উপর ৯৭৯ টি যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। শুধুমাত্র বেঙ্গালুরুতেই ১১৪ টিরও বেশি ঘটনা ঘটেছে। রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তার কারণে আমাদের নারী ও শিশুরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে… এটি একটি নৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা।”

তিনি জাতীয় মহিলা কমিশনকে (এনসিডব্লিউ) একটি জরুরি চিঠি দিয়ে কর্ণাটকে অনুসন্ধানকারী দল পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও এখনও পর্যন্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কোনও বিবৃতি দেয়নি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy