ওয়াকফ বিতর্কের মাঝেই নতুন উত্তেজনা! কেন্দ্রীয় OBC তালিকা থেকে বাংলার ৩৫টি মুসলিম জাতিকে বাদ দিল NCBC

রাজ্যে ওয়াকফ সম্পত্তির বিতর্ক এবং নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোরের মধ্যেই ফের এক নতুন বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। ন্যাশনাল কমিশন ফর ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস (NCBC) এবার কেন্দ্রীয় ওবিসি (OBC) তালিকা থেকে পশ্চিমবঙ্গের ৩৫টি মুসলিম জাতিকে বাদ দিয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল আরও উত্তপ্ত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের ৭৭টি ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করেছিল, যার মধ্যে ৭৫টিই ছিল মুসলিম জাতিগোষ্ঠীর। এবার সেই ঘটনারই ছায়া কেন্দ্রীয় তালিকায় পড়ল।

ঘটনার সূত্রপাত ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে। ২০১১ সালে তৎকালীন ইউপিএ সরকারের আমলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ৪৬টি জাতির অন্তর্ভুক্তির সুপাশির করে কেন্দ্রকে। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্র ৩৭টি জাতিকে কেন্দ্রীয় ওবিসি তালিকায় যোগ করে, যার মধ্যে ৩৫টি ছিল মুসলিম সম্প্রদায়। এই জাতিগুলোর মধ্যে রয়েছে ফারাজি, রাইন, নাসা, মাহম্মদ্রি, কাসাই—যারা ঐতিহ্যগতভাবে পিছিয়ে থাকার দাবি করত।

বিজেপির প্রতিক্রিয়া: ‘তোষণের রাজনীতি শেষ’

এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় বিজেপির আইটি সেলের প্রধান এবং পশ্চিমবঙ্গ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোকে রাজনৈতিক সুবিধার জন্য ওবিসি কোটার আওতায় আনা হয়েছিল। তাঁর দাবি, এর ফলে আসল পিছিয়ে পড়া হিন্দু গোষ্ঠীগুলি তাদের ন্যায্য ভাগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল।

মালব্য বলেন, মোদী সরকার এই দীর্ঘদিনের ‘তোষণমূলক বিকৃতি’ দূর করে প্রকৃত পিছিয়ে থাকাকে ভিত্তি করে সামাজিক ন্যায় নিশ্চিত করেছে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পশ্চাদপসরণের রাজনীতির’ সময় শেষ হয়েছে।

হাইকোর্টের রায় ও স্থগিতাদেশের প্রেক্ষাপট

এখানে উল্লেখ্য যে, গত বছরের ২২ মে কলকাতা হাইকোর্ট ওবিসি নিয়ে প্রথম রায় দিয়েছিল। আদালত নির্দেশ দেয় যে ২০১০ সালের পর রাজ্যের তালিকায় যত ওবিসি সম্প্রদায় যুক্ত হয়েছে, তা বাতিল। ২০১০ সালের পর থেকে জারি করা সমস্ত ওবিসি শংসাপত্রও বাতিল করে দেওয়া হয়। আদালত রাজ্যকে সামাজিক, আর্থিক এবং পেশাগত ভাবে সমস্ত জন গোষ্ঠীর মধ্যে সমীক্ষা করে নতুন করে ওবিসি তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিল। রাজ্য এই অনুসারে একটি সমীক্ষা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও, ১৭ জুন হাই কোর্ট সেই বিজ্ঞপ্তির ওপরও স্থগিতাদেশ দেয়। বর্তমানে রাজ্য উচ্চ আদালতের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy