রাজ্যের ভোটার তালিকা নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে গুজব—বিভিন্ন ইস্যুতে বৃহস্পতিবার বহরমপুরের সভা থেকে কেন্দ্রীয় মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তিনি রাজ্যে বিজেপিকে রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।
SIR ইস্যুতে কেন্দ্র ও কমিশনকে আক্রমণ:
এসআইআর ইস্যুতে সরব হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্র ও নির্বাচন কমিশনকে (ECI) নিশানা করেন:
বিজেপি শাসিত রাজ্যে SIR নেই কেন: তিনি প্রশ্ন তোলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যে কেন এসআইআর হচ্ছে না? তাঁর অভিযোগ, বিজেপি যেখানে ক্ষমতায় নেই, ভোটের আগে সেখানেই এসআইআর হচ্ছে। অসম, ত্রিপুরায় এসআইআর হচ্ছে, অথচ বিজেপি ক্ষমতায় আছে বলে এই রাজ্যগুলিতে একই নিয়ম মানা হচ্ছে না।
বাঙালি বিদ্বেষী অভিযোগ: মমতা বিজেপিকে ‘বাঙালি বিদ্বেষী’ আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেন যে, বিজেপি বাঙালি ও পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার করছে এবং তাদের জেলে পুরছে।
নিজের নাম না তোলার কারণ: তিনি জনগণকে অভয় দিয়ে জানান, “যতক্ষণ না আপনাদের সকলের নাম উঠছে ততক্ষণ আমি নিজের নাম তুলব না।” তিনি প্রতিটা বুথে ‘মে আই হেল্প ইউ’ ক্যাম্প করার নির্দেশ দেন যাতে জনগণের সুবিধা হয়।
রাষ্ট্রপতি শাসন ও এনআরসি নিয়ে হুঁশিয়ারি:
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এসআইআর না মানলে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হতো। তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিশানা করেন:
“এসআইআর নিয়ে ভয় পাবেন না। শুধু নিজের নথিগুলি জমা দিন। যদি এসআইআর না করতে দিতাম তাহলে ভোট না করে ওরা রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করত। বুঝেছেন অমিত শাহের চালাকি?”
তিনি বলেন, “আমরা অত বোকা নিয়ই… আমরা করব, লড়ব। জিতে দেখাব। আমাদের ভাতে মারা যাবে না। সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া যাবে না।” মমতা স্পষ্ট জানান, এই রাজ্যে তিনি ডিটেনশন ক্যাম্প করতে দেবেন না এবং এনআরসিও করতে দেবেন না।
ওয়াকফ সম্পত্তি ও গুজব প্রসঙ্গে:
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়ানো গুজব নিয়েও সরব হন।
আইন পাসের উল্লেখ: তিনি ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে কিছু না করার অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দেন এবং বলেন, “আমরা বিধানসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আইন পাশ করেছিলাম। বলেছিলাম জোর করে সম্পত্তি কাড়া যাবে না।”
গুজব ছড়ানো: তিনি অভিযোগ করেন, কিছু দুষ্কৃতী বিজেপির টাকা খেয়ে গুজব রটাচ্ছে এবং ধর্মীয় স্থানগুলি নথিভুক্ত করা নিয়ে মিথ্যা প্রচার করছে। তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তাঁর মুখে অন্যের কথা বসানো হচ্ছে।