একই বুথের ৪৯১ জনকে হিয়ারিংয়ের নোটিস! নদীয়ার চাঁদেরঘাটে চরম আতঙ্ক, কাঠগড়ায় SIR প্রক্রিয়া

নদীয়ার পলাশীপাড়া বিধানসভার চাঁদেরঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনী বা SIR (State Intensive Revision) হিয়ারিংকে কেন্দ্র করে নজিরবিহীন আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ওই পঞ্চায়েতের ২১৫ নম্বর বুথের মোট ১,১৭৬ জন ভোটারের মধ্যে ৪৯১ জনকেই শুনানির জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে। খসড়া তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে কেন তলব করা হলো, তা নিয়েই এখন রাতের ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের।

আতঙ্কের কেন্দ্রে বৈধ নথির লড়াই: স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁরা জন্মসূত্রে এই এলাকার বাসিন্দা। ভোটার কার্ড ১৯৯৫ সালের বা তারও আগের। অনেকের নাম ২০০২ সালের তালিকাতেও ছিল। আধার, রেশন কার্ড থেকে শুরু করে জমির দলিল— সব বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁদের নাগরিকত্ব বা পরিচয় নতুন করে যাচাই করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। খোদ সংশ্লিষ্ট বুথের পঞ্চায়েত সদস্য তুহিন কুমার মণ্ডল ও তাঁর পরিবারকেও এই শুনানির নোটিস পাঠানো হয়েছে।

রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি: এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য তুহিন কুমার মণ্ডলের দাবি, এটি একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক চক্রান্ত। বেছে বেছে শাসকদলের কর্মী-সমর্থকদের নাম তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলতেই এই গণ-নোটিস পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপি নেতা উদয় বিশ্বাসের দাবি, নির্বাচন কমিশন নিয়মের বাইরে কিছুই করছে না। যাঁদের বৈধ নথি আছে, তাঁদের ভয়ের কোনও কারণ নেই।

কেন এই গণ-তলব? নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, শনিবার থেকে রাজ্যজুড়ে এসআইআর-এর প্রথম দফার শুনানি শুরু হচ্ছে। মূলত যাঁদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে ‘ম্যাপিং’ করা সম্ভব হয়নি বা লিঙ্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি, তাঁদেরই এই শুনানিতে ডাকা হচ্ছে। রাজ্যজুড়ে মোট ৩১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৪২৪ জন ভোটারকে এই পর্যায়ে নোটিস পাঠানো হয়েছে। তবে পলাশীপাড়ার চাঁদেরঘাটে একই বুথের প্রায় অর্ধেক ভোটারকে নোটিস দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই স্বচ্ছতা নিয়ে সরব হয়েছেন এলাকাবাসী।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy