অনিল অম্বানি নেতৃত্বাধীন রিলায়েন্স গ্রুপের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) আরও একবার কঠোর পদক্ষেপ নিল। ইডি জানিয়েছে, ইয়েস ব্যাঙ্কের সঙ্গে জড়িত আর্থিক প্রতারণা মামলায় তারা নতুন করে রিলায়েন্স হোম ফাইন্যান্স লিমিটেড (RHFL) এবং রিলায়েন্স কমার্শিয়াল ফাইন্যান্স লিমিটেড (RCFL)-এর মোট ১,১২০ কোটি টাকার সম্পত্তি সংযুক্ত করেছে।
সংযুক্ত সম্পত্তিগুলির মধ্যে রয়েছে ১৮টিরও বেশি স্থাবর সম্পদ, ফিক্সড ডিপোজিট, ব্যাঙ্ক ব্যালান্স এবং আনলিস্টেড শেয়ারহোল্ডিং। ইডি’র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাজেয়াপ্ত হওয়া সম্পদের তালিকায় রয়েছে রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এবং রিলায়েন্স পাওয়ার লিমিটেডের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। এছাড়াও রিলায়েন্স ভ্যালু সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড-সহ আরও কয়েকটি সংস্থার নামে থাকা স্থায়ী আমানত এবং বিনিয়োগও সংযুক্ত করা হয়েছে।
এই নতুন পদক্ষেপের ফলে ইডি কর্তৃক এই মামলায় রিলায়েন্স গ্রুপের মোট সংযুক্ত সম্পদের মূল্য দাঁড়াল বিপুল অঙ্কের—১০,১১৭ কোটি টাকা। এর আগে বিভিন্ন ধাপে প্রায় ৮,৯৯৭ কোটি টাকার সম্পত্তি সংযুক্ত করেছিল ইডি।
ইডির তদন্তে কী উঠে এসেছে? ইডি’র তদন্তে জানা গেছে, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ইয়েস ব্যাঙ্ক RHFL ও RCFL-এ মোট প্রায় ৫,০১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিল, যা পরে নন-পারফর্মিং অ্যাসেট (NPA)-এ পরিণত হয়। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, জনগণের বিনিয়োগ করা এই অর্থের একটি বড় অংশ বিভিন্ন গ্রুপ কোম্পানির মাধ্যমে চক্রাকার প্রক্রিয়ায় ঘুরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
সংস্থার অভিযোগ, মোট ১১,০০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ মিউচুয়াল ফান্ড ইনভেস্টমেন্ট এবং ইয়েস ব্যাঙ্কের ঋণের মাধ্যমে এমন জটিল প্রক্রিয়ায় সরানো হয়েছিল যা SEBI–এর ‘কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট’ নিয়মকে লঙ্ঘন করে।
ইডি আরও একটি মামলার তদন্ত করছে, যেখানে ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রিলায়েন্স কমিউনিকেশন্স (RCOM) সহ অনিল অম্বানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলি মোট ৪০,১৮৫ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছিল। সেই ঋণের অ্যাকাউন্টগুলিকে ইতিমধ্যে ৯টি ব্যাঙ্ক ‘ফ্রড’ বা প্রতারণামূলক বলে চিহ্নিত করেছে। ইডি’র দাবি, এই ঋণের টাকা ‘এভারগ্রিনিং’ এবং সহযোগী সংস্থাগুলিতে সরানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।
ইডি বিবৃতিতে স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত সম্পূর্ণ অর্থ উদ্ধার করে প্রকৃত দাবিদারদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।
