২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকাকে নির্ভুল ও স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে উত্তরপ্রদেশে ২২ বছরের মধ্যে প্রথম স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR) শুরু করল ভারতের নির্বাচন কমিশন (ECI)। এটি দেশের বৃহত্তম ভোটার তালিকা পুনর্লিখনগুলির মধ্যে অন্যতম।
আজ, অক্টোবর ২৮ মধ্যরাত থেকে ভোটার তালিকা ‘ফ্রিজ’ করা হয়েছে। অক্টোবর ২৯ থেকে শুরু হওয়া চার মাসব্যাপী এই প্রক্রিয়ায় রাজ্যের ৪০৩টি বিধানসভা কেন্দ্র এবং ৮০টি লোকসভা আসনে মোট ১.৬২ লাখের বেশি বুথ লেভেল অফিসার (BLO) ১৫.৪৪ কোটি নিবন্ধিত ভোটারের তথ্য যাচাই করবেন।
মহাযজ্ঞের উদ্দেশ্য ও সময়সূচি
বিহারের SIR মডেলের উপর ভিত্তি করে এই পুনর্লিখন প্রক্রিয়ার মূল লক্ষ্য হল ভোটার তালিকা থেকে দ্বৈত (duplicate) বা অযোগ্য ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া এবং নতুন যোগ্য নাগরিকদের যুক্ত করা। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (CEO) নবদীপ রিনওয়া জানিয়েছেন, “নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবং প্রতিটি ভোটারের যোগ্যতা নতুন করে যাচাই করতে” ECI এই উদ্যোগ নিয়েছে।
নভেম্বর ৪ থেকে ডিসেম্বর ৪, ২০২৫ পর্যন্ত প্রতিটি BLO তাদের নিজ নিজ এলাকার প্রতিটি বাড়িতে তিনবার করে যাবেন। সন্দেহজনক এন্ট্রি চিহ্নিত করা হবে এবং অযোগ্য মনে হলে তাদের নাগরিকত্ব ও বাসস্থানের প্রমাণপত্র দেখাতে বলা হবে। ডিসেম্বরের ৫ তারিখে ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশিত হবে এবং ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৬ তারিখে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে।
দলিল ও বিতর্ক
প্রাথমিক পর্যায়ে ভোটারদের কোনো নথি জমা দিতে হবে না। তবে, যদি কোনো অসঙ্গতি দেখা দেয় বা নতুন ভোটারদের নাম নথিভুক্ত করার প্রয়োজন হয়, তবে আধার কার্ড, পাসপোর্ট, ভোটার আইডি, প্যান কার্ড সহ ১১টি নথি জমা দিতে হবে।
বিহারের SIR-এর অনুপাতের ভিত্তিতে অনুমান করা হচ্ছে যে উত্তরপ্রদেশের ভোটার তালিকা থেকে ১.৩০ কোটি নাম বাদ যেতে পারে। এই ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যে রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন যে “যদি SIR-এ অনিয়ম হয়, তবে উত্তরপ্রদেশে নেপালের মতো পরিস্থিতি হবে”। অন্যদিকে, উপ-মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক এই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “কেবল যোগ্য নাগরিকরাই তালিকায় থাকা উচিত। বহিরাগত বা অযোগ্য ভোটারদের চিহ্নিত করা একটি স্বাগত পদক্ষেপ।”