আলিপুর চিড়িয়াখানায় অরাজকতা! নিয়ম ভাঙার মহোৎসব, কোথায় নিরাপত্তারক্ষীরা?

শীতের মরসুমে তিলোত্তমার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ আলিপুর চিড়িয়াখানা (Zoological Garden Alipore)। কিন্তু বর্তমানে এই চিড়িয়াখানা যেন কোনো বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র নয়, বরং এক বিশৃঙ্খল খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে। গেটের বাইরে বড় বড় পোস্টারে পশু-পাখিদের খাবার না দেওয়া, শব্দ না করা বা খেলাধুলা নিষিদ্ধ করার কথা লেখা থাকলেও, ভেতরে ঢুকে দেখা যাচ্ছে তার ঠিক উল্টো ছবি। সাধারণ মানুষের অসচেতনতা এবং প্রশাসনের উদাসীনতা— এই দুইয়ের মিশেলে চিড়িয়াখানার পরিবেশ এখন দুর্বিষহ।

প্রথমেই ভোগান্তির শুরু প্রবেশপথে। ফুট ওভারব্রিজের এসকেলেটরটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল। ফলে হাজার হাজার মানুষ, বিশেষ করে বয়স্ক এবং শিশুদের সংকীর্ণ সিঁড়ি দিয়ে উঠতে-নামতে প্রাণান্তকর অবস্থা হচ্ছে। চিড়িয়াখানার ভেতরে প্রবেশ করলেই দেখা মিলছে অবাধে ব্যাডমিন্টন, ফুটবল এবং ক্রিকেট খেলার দৃশ্য। বাঘের খাঁচার সামনে উপচে পড়া ভিড় সামলানোর কেউ নেই, সেখানে তারস্বরে চিৎকার করে পশুদের বিরক্ত করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমনকি পিকনিকের মেজাজে খাওয়া-দাওয়া সেরে মাঠের ওপর নোংরা ও থালা-বাটি ফেলে রাখার হিড়িকও চোখে পড়ার মতো।

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো নিরাপত্তার অভাব। আগে চিড়িয়াখানার নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীদের কড়া নজরদারি থাকলেও এখন তাঁদের হদিশ পাওয়া দুষ্কর। কিছু যুবক-যুবতী পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে ঘুরলেও, তাঁদের কাজের কোনো কার্যকারিতা নজরে আসছে না। এশিয়ানেট নিউজ বাংলার প্রতিনিধি এই অরাজকতা নিয়ে এক কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে প্রশ্ন করলে তিনি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, “কতজনকে সামলাব? আমরা তো এখানে একদিনের জন্য ভাড়া খাটতে এসেছি।” এই ‘ভাড়া খাটা’ শব্দবন্ধটিই স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার প্রতি প্রশাসনের নজরদারি কতটা তলানিতে পৌঁছেছে। বন্যপ্রাণীদের এই অশান্তি থেকে বাঁচাতে দ্রুত কড়া পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছেন পরিবেশবিদরা।

Related Posts

© 2026 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy