রাজস্থানের পাহাড়ি অঞ্চলে পাওয়া মহুয়া গাছকে আয়ুর্বেদিক গুণাবলীর এক বিশাল ভাণ্ডার হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এর পাতা, ফল, ফুল এবং ডালপালা—এই গাছের সবকিছুই মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি শুধু ওষুধ হিসেবেই নয়, রান্নার কাজেও ব্যবহৃত হয়।
মহুয়া ফুলে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।
মহুয়ার প্রধান স্বাস্থ্য উপকারিতা:
জয়েন্টের ব্যথা ও আর্থ্রাইটিস: মহুয়ার ছালের ক্বাথ পান করলে বা এর তেল দিয়ে মাসাজ করলে জয়েন্টের ব্যথা এবং আর্থ্রাইটিস থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায়।
শক্তি ও ক্লান্তি দূর: শুকনো মহুয়া ফুল দুধে ফুটিয়ে পান করলে শারীরিক দুর্বলতা দূর হয় এবং শরীর সতেজ হয়।
হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য: মহুয়া ফুল হজম ব্যবস্থার উন্নতি ঘটায়। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য ও অর্শের মতো সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
ত্বকের সমস্যা: মহুয়া বীজের তেল চুলকানি, একজিমা এবং পোড়ার মতো ত্বকের সমস্যা নিরাময়েও অত্যন্ত কার্যকর।
ভালো ঘুম: রাতে ভালো ঘুমের জন্য এক গ্লাস দুধে ৫-৬টি শুকনো মহুয়া ফুল ফুটিয়ে পান করা যেতে পারে। এই ফুলের শীতল প্রভাব ক্লান্তি দূর করতেও সহায়ক।
রান্না ও খাবারে মহুয়া:
ওষুধের পাশাপাশি মহুয়া ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়:
লাড্ডু ও হালুয়া: শুকনো মহুয়া ফুল ভাজা হয় এবং গুড় ও ঘি মিশিয়ে বাড়িতে লাড্ডু বা সুস্বাদু হালুয়া তৈরি করা যেতে পারে।
রুটি ও শরবত: উপজাতীয় এলাকায় মহুয়ার ময়দা, সাধারণ ময়দার সঙ্গে মিশিয়ে রুটি তৈরি করা হয়। এটি শরবতের মতো স্বাস্থ্যকর পানীয়তেও ব্যবহৃত হয়।
সতর্কতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:
যদিও মহুয়া বহু গুণে গুণান্বিত, তবে এর অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন ক্ষতিকারক হতে পারে।
মহুয়ার অতিরিক্ত সেবন নেশা এবং মাথাব্যথার মতো লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে।
মহুয়া ফুলে উচ্চ পরিমাণে চিনি থাকার কারণে, ডায়াবেটিস রোগী এবং গর্ভবতী মহিলাদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এগুলি খাওয়া উচিত নয়।