অবশেষে কাটল বাধা! যামিনী রায়ের বালিগঞ্জের বাড়ি সেজে উঠবে আন্তর্জাতিক আর্ট গ্যালারিতে, দিল পুরনিগম

দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ এলাকার এক সরু গলির মধ্যে জীর্ণ শরীরে দাঁড়িয়ে থাকা তিনতলা বাড়িটি এবার ইতিহাস এবং শিল্পকলার এক নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে। একসময় এই বাড়িটিই জন্ম দিয়েছিল বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের জগৎজোড়া খ্যাতি অর্জন করা শিল্পকর্মের। এবার সেই বাসভবনকেই আন্তর্জাতিক মানের একক শিল্পীর আর্ট গ্যালারি হিসেবে সংস্কারের অনুমতি দিল কলকাতা পুরনিগম।

সংস্কারের পথে আর বাধা নেই: বাড়িটি সংস্কার করে তার ভোল বদলে দেওয়া হবে। এটি আন্তর্জাতিক মানের আর্ট গ্যালারি ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। প্রায় দুই বছর আগে দিল্লি আর্ট গ্যালারি যামিনী রায়ের পরিবারের কাছ থেকে এই ঐতিহাসিক সম্পত্তিটি কিনে নেয়। যেহেতু ভবনটি কলকাতা পুরনিগমের হেরিটেজ তালিকায় রয়েছে, তাই এর সংস্কার কাজ শুরু করার জন্য হেরিটেজ বিভাগের ছাড়পত্রের প্রয়োজন ছিল। সম্প্রতি কলকাতা পুরনিগমের মেয়র পারিষদ বৈঠকে সেই অনুমোদন মেলে, ফলে সংস্কারের পথে আর কোনো বাধা রইল না।

বাড়িটির গুরুত্ব: শিল্পী যামিনী রায় তাঁর জীবনের শেষ সময়টুকু বালিগঞ্জের ১৮/২৯ ঠিকানার এই বাড়িতেই কাটিয়েছিলেন। এই তিনতলা বাড়ির নীচের বিশাল অংশে ছিল তাঁর শিল্প সৃষ্টির কারখানা বা স্টুডিয়ো। তাঁর শিল্পকর্মই দেশ-বিদেশের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিকে এই ঠিকানায় টেনে এনেছিল। শিল্পীর প্রয়াণের পর এলাকার মূল রাস্তার নামকরণ করা হয় যামিনী রায় সরণী। বাড়িটি ঐতিহ্যশালী ভবন হলেও, এর গ্রেড এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।

কলকাতায় প্রথম একক শিল্পীর গ্যালারি: সরকারি স্তরে ভারতে এবং বিদেশে একক শিল্পীর নামে আর্ট গ্যালারি থাকলেও, কলকাতায় এই প্রথম কোনো একক শিল্পীর আর্ট গ্যালারি তৈরি হতে চলেছে।

গ্যালারিতে কী কী থাকবে: দিল্লি আর্ট গ্যালারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই গ্যালারিতে শুধুমাত্র যামিনী রায়ের শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হবে। একসময় যা কারখানা হিসেবে ভাড়া দেওয়া হত, সেই স্টুডিয়োটি ফের নতুন আঙ্গিকে ফিরে আসবে। এছাড়াও গ্যালারিতে থাকছে:

একটি ক্যাফেটেরিয়া

তাঁর প্রাপ্ত পুরস্কার ও সম্মাননা প্রদর্শনের জন্য বিশেষ স্থান

একটি লাইব্রেরি

লাইভ পারফরম্যান্স এবং ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা।

পুরনিগমের বক্তব্য: কলকাতা পুরনিগমের হেরিটেজ বিভাগের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার বলেন, “বাড়িটি ঐতিহ্যশালী ভবন। হেরিটেজ কমিটি খতিয়ে দেখছে সংস্কার কাজে কী পরিবর্তন বা সংযোজন হবে। আমরা চাই, আগামী কয়েক প্রজন্ম এই গ্যালারিতে এসে যামিনী রায়কে জানতে পারুক এবং তাঁর কাজ দেখতে পারুক।”

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy