আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর দেওয়া গ্রেডিং নিয়ে লোকসভায় সৃষ্ট উদ্বেগ দূর করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বুধবার তিনি সংসদে জানান যে, আইএমএফ ভারতীয় অর্থনীতির সুস্থ প্রবৃদ্ধিকে ইতিবাচকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হিসাব নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলেনি। তিনি স্পষ্ট করেন যে, ভারতকে যে ‘সি’ গ্রেড দেওয়া হয়েছে, তার একমাত্র কারণ হলো জাতীয় হিসাব তৈরির জন্য বর্তমানে ২০১১-১২ সালের পুরোনো ভিত্তি বছর ব্যবহার করা হচ্ছে।
নতুন বেস পিরিয়ড আসছে:
এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, কেন্দ্র ইতিমধ্যেই এই ত্রুটি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২৬ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় হিসাব তৈরির জন্য নতুন ভিত্তি বছর ২০২২-২৩ কার্যকর হবে। এই পরিবর্তনের ফলে তথ্য আরও বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী হবে।
অর্থনীতির স্থিতি নিয়ে IMF-এর প্রশংসা:
সীতারামন জোর দিয়ে বলেন যে, আইএমএফ-এর রিপোর্টে ভারতীয় অর্থনীতির শক্ত ভিত্তি, বেসরকারি খাতের বিকাশ এবং আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতাকে বিশেষভাবে প্রশংসা করা হয়েছে। রিপোর্টে অনুমান করা হয়েছে যে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৫ শতাংশ হতে পারে।
মুদ্রাস্ফীতির হারও নিয়ন্ত্রিত রয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্ধারিত সীমার নিচে এই হার এ বছর গড়ে ৪.৩ শতাংশ থাকবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
ভুল বোঝাবুঝি দূর করলেন অর্থমন্ত্রী:
অর্থমন্ত্রী পরিষ্কার ব্যাখ্যা দেন, ‘সি’ গ্রেড কেবল পুরোনো ভিত্তি বছরজনিত সীমাবদ্ধতার জন্যই দেওয়া হয়েছে; জাতীয় প্রবৃদ্ধি বা অর্থনৈতিক সূচক নিয়ে কোনও প্রশ্ন করা হয়নি। তিনি বলেন, “সবকিছু শুধু ডেটা সংগ্রহ ও পুরোনো বেস ইয়ার ব্যবহারের কারণে হয়েছে।”
আইএমএফ-এর চারটি গ্রেডের মধ্যে ‘এ’ হলো পর্যবেক্ষণের জন্য পরিপূর্ণ এবং ‘ডি’ হলো গুরুতর ত্রুটি নির্দেশক। ভারত মুদ্রাস্ফীতি, বহির্বাণিজ্য তথ্য এবং আর্থিক পরিসংখ্যানের মতো অন্যান্য সমস্ত ক্ষেত্রে ‘বি’ গ্রেড পেয়েছে। ফলে ভারতের গড় গ্রেডও ‘বি’, যা চীন, ব্রাজিলসহ বহু উন্নয়নশীল দেশের সমতুল্য।
সার্বিকভাবে, অর্থমন্ত্রীর দাবি, ভারতের অর্থনীতি শক্তিশালী পথেই এগোচ্ছে এবং আইএমএফ-এর রিপোর্টও সেই বিষয়টিকে সমর্থন করেছে।