BLO-দের ‘আত্মহত্যা’ ও কাজের চাপ! ‘মৃত্যুর দায় রাজ্য সরকারের’, কর্মীদের সুরক্ষায় কড়া নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

ভোটার তালিকা সংশোধনের দায়িত্বে থাকা বুথ লেভেল অফিসারদের (BLO) উপর কাজের ক্রমবর্ধমান চাপ এবং এই সংক্রান্ত অসুস্থতা ও ‘আত্মহত্যার’ মতো মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।

বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিল—বিএলওদের কাজের পরিবেশ ও মানসিক চাপের জন্য সম্পূর্ণ দায় রাজ্য সরকারকেই নিতে হবে।

আদালতের কড়া পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশ:

জনবল বাড়ানোর নির্দেশ: বেঞ্চ মন্তব্য করে, “যেখানে ১০ হাজার কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে, সেখানে চাইলে ৩০ হাজারও মোতায়েন করা সম্ভব।” আদালত রাজ্যগুলির উদাসীনতার দিকে ইঙ্গিত করে জানায় যে, কর্মীদের ওপর চাপ এতটাই বেড়েছে যে মৃত্যুর ঘটনাও বাড়ছে।

ছুটির আবেদন মঞ্জুর: আদালত স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছে যে, যে বিএলওরা অসুস্থ, অক্ষম বা ব্যক্তিগত কারণে অব্যাহতি চান, তাঁদের আবেদন তৎক্ষণাৎ মঞ্জুর করতে হবে এবং পরিবর্তে অন্য কাউকে নিয়োগ করতে হবে।

সরাসরি আদালতে আসার অনুমতি: আদালত আরও জানিয়েছে, যদি মানবিক কারণে কর্মীদের আবেদন মঞ্জুর না করা হয়, তবে ওই কর্মী সরাসরি আদালতে আসতে পারবেন।

মামলার প্রেক্ষাপট ও অভিযোগ:

টিভিকে-র আবেদন: এই মামলার সূত্রপাত তামিল অভিনেতা বিজয়ের দল তামিলাগা ভেত্রি কাজগম (TVK)-এর আবেদনে। তাদের দাবি, এ পর্যন্ত ৩৫–৪০ জন বিএলও-র মৃত্যু ঘটেছে।

জেলের ভয়: টিভিকে অভিযোগ করেছে, নির্বাচন কমিশন কর্মীদের উপর জেলের ভয় দেখিয়ে জোর করে কাজ করাচ্ছে। এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে প্রতিনিধিত্ব আইন, ধারা ৩২, যেখানে কাজ ফাঁকি দিলে দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

মমতার বক্তব্য: পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্যান্য রাজ্যে যখন ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে, তখন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই বিষয়ে সরব হন। তিনি বলেন, “এই অপরিসীম কাজের চাপ মানবক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কমিশন কর্মীদের ভয় দেখিয়ে কাজ করাচ্ছে।”

যদিও প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বিএলওরা রাজ্য সরকারী কর্মচারী, ফলে তাঁদের মৃত্যুর দায় নির্বাচন কমিশনের নয়। ইসির (EC) পক্ষ থেকে টিভিকে-র অভিযোগকে “সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন” বলে দাবি করা হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy