কেন্দ্রীয় বঞ্চনা এবং ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’ প্রকল্পে কেন্দ্রের বরাদ্দ আটকে রাখার অভিযোগ বারবার তুলেও ফল মেলেনি। তাই এবার আর কেন্দ্রের অনুমোদনের অপেক্ষা না করে, গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নের দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নবান্নে শুরু হয়েছে জোর তৎপরতা।
আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যেই রাজ্যে ১৫,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা তৈরি বা সংস্কার করা হবে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞের আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
‘পথশ্রী’ প্রকল্পের সম্প্রসারণ
দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রের ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা ৩’ প্রকল্পে বাংলাকে বরাদ্দ না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ওই প্রকল্পে রাজ্যের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬,২৫৫ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ, যার মধ্যে প্রায় ২,০১৯ কিলোমিটারের অনুমোদন এখনও আটকে রেখেছে কেন্দ্র। ফলস্বরূপ, রাজ্য সরকার নিজস্ব উদ্যোগেই ‘পথশ্রী’ প্রকল্পকে আরও সম্প্রসারিত করতে চলেছে।
পরিকল্পনা: দুর্গাপুজোর ছুটির পরেই নবান্ন থেকে পঞ্চায়েত দপ্তরকে এই প্রকল্পের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তৎপরতা: ইতিমধ্যে সমস্ত জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক সেরেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। পোর্টাল সংক্রান্ত পর্যালোচনা বৈঠকও শেষ।
ওয়ার্ক অর্ডার: সূত্রের খবর, ডিসেম্বরের মধ্যেই এই কাজের ওয়ার্ক অর্ডার জারি হতে পারে।
‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও গ্রামবাংলার উন্নয়ন’
রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন,
“লাগাতার কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও গ্রামবাংলার উন্নয়নে বদ্ধপরিকর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই রাজ্যের কোষাগার থেকেই রাস্তা সম্প্রসারণ ও সংস্কারের জন্য ব্যয় করা হবে।”
সূত্রের খবর, সরাসরি ‘মুখ্যমন্ত্রী হেল্পলাইন’ নম্বরে আসা সাধারণ মানুষের অভিযোগ ও অনুরোধের ভিত্তিতে গ্রামীণ রাস্তা চিহ্নিত করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পাঠানো তালিকাও মিলিয়ে দেখা হচ্ছে, যাতে প্রকৃত প্রয়োজনের জায়গাতেই উন্নয়নের কাজ শুরু হয়।
যদি পরিকল্পনা মতো সবকিছু এগোয়, তবে আগামী এপ্রিলের মধ্যেই রাজ্যের মানচিত্রে যুক্ত হবে আরও ১৫ হাজার কিলোমিটার নতুন ও সংস্কার করা রাস্তা, যা গ্রামবাংলার উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।