নদীয়ার পলাশীপাড়া বিধানসভার চাঁদেরঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনী বা SIR (State Intensive Revision) হিয়ারিংকে কেন্দ্র করে নজিরবিহীন আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ওই পঞ্চায়েতের ২১৫ নম্বর বুথের মোট ১,১৭৬ জন ভোটারের মধ্যে ৪৯১ জনকেই শুনানির জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে। খসড়া তালিকায় নাম থাকা এবং ২০০২ সালের পুরনো ভোটার তালিকাতেও নাম থাকা সত্ত্বেও কেন এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে তলব করা হলো, তা নিয়েই এখন রাতের ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের।
আতঙ্কের কেন্দ্রে বৈধ নথির লড়াই: স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁরা জন্মসূত্রে এই এলাকার বাসিন্দা। ভোটার কার্ড ১৯৯৫ সালের বা তারও আগের। অনেকের নাম ২০০২ সালের তালিকাতেও ছিল। আধার, রেশন কার্ড থেকে শুরু করে জমির দলিল— সব বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁদের নাগরিকত্ব বা পরিচয় নতুন করে যাচাই করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। অনেকেরই আশঙ্কা, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটার তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।
রাজনৈতিক চাপানউতোর: এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই বেছে বেছে তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের নাম তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলার চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে, বিজেপি নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ নিয়ম মেনেই ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজ করছে। যাঁদের কাছে বৈধ নথি রয়েছে, তাঁদের ভয়ের কোনও কারণ নেই।
কেন এই গণ-তলব? নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, রাজ্যজুড়ে এসআইআর-এর যে শুনানি চলছে, তাতে মূলত যাঁদের তথ্যের সঙ্গে পুরনো রেকর্ডের গরমিল পাওয়া যাচ্ছে, তাঁদেরই ডাকা হচ্ছে। তবে পলাশীপাড়ার চাঁদেরঘাটে একই বুথের প্রায় অর্ধেক ভোটারকে নোটিস দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই স্বচ্ছতা নিয়ে সরব হয়েছেন এলাকাবাসী। গোটা বিষয়টি নিয়ে দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।