ভারত তার সামরিক সক্ষমতাকে ক্রমাগত বৃদ্ধি করছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, ভারতীয় নৌবাহিনী (Indian Navy) একটি নতুন উৎসাহ পেতে চলেছে। আগামী ৬ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে, দেশীয়ভাবে নির্মিত সার্ভে ভেসেল ‘ইক্ষক’ (Survey Vessel Ikshak) নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করবে। এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানটি নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে. ত্রিপাঠীর সভাপতিত্বে কোচি নৌঘাঁটিতে (Kochi Naval Base) অনুষ্ঠিত হবে।
‘ইক্ষক’-এর বিশেষত্ব ও স্বদেশীকরণ:
ইক্ষক হলো ভারতীয় নৌবাহিনীর তৃতীয় জরিপ জাহাজ (লার্জ)।
জাহাজটি কলকাতায় গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স (জিআরএসই) দ্বারা নির্মিত হয়েছে।
জাহাজটির ৮০% এরও বেশি উপাদান এবং প্রযুক্তি ভারতে তৈরি, যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘স্বনির্ভর ভারত’ (Aatmanirbhar Bharat) উদ্যোগকে প্রতিফলিত করে।
জাহাজটির নামও তাৎপর্যপূর্ণ: ‘ইক্ষক’ অর্থ পথপ্রদর্শক বা যিনি দিকনির্দেশনা দেন।
নৌ ও মানবিক সক্ষমতা:
প্রধান কাজ: এই জাহাজটি সামুদ্রিক মানচিত্র এবং বিস্তৃত জরিপ কার্যক্রম সম্পাদন করবে। সমুদ্রের গভীরতা এবং ভূখণ্ডের নিখুঁতভাবে মানচিত্র তৈরির জন্য এতে অত্যাধুনিক সেন্সর এবং নতুন উপগ্রহ-ভিত্তিক নেভিগেশন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে।
গতি ও টিকে থাকার ক্ষমতা: জাহাজটি ১১০ মিটার লম্বা এবং প্রায় ৩,৮০০ টন ওজনের। দুটি ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা চালিত এই ভেসেলটি সর্বোচ্চ ১৮ নটিক্যাল মাইল প্রতি ঘন্টা গতিতে ভ্রমণ করতে পারে এবং ২৫ দিনেরও বেশি সময় সমুদ্রে টিকে থাকতে পারে।
বহুমুখী ব্যবহার: প্রয়োজনে ইক্ষক দুর্যোগ ত্রাণ (Disaster Relief) এবং হাসপাতালের জাহাজ হিসেবেও কাজ করতে পারে।
অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা: উল্লেখযোগ্যভাবে, ইক্ষক মহিলা নাবিকদের জন্য পৃথক থাকার ব্যবস্থা করেছে, যা নৌবাহিনীর আধুনিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতির প্রতিফলন ঘটায়।
প্রকল্পের অগ্রগতি:
‘জরিপ জাহাজ (বৃহৎ)’ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ চারটি জাহাজের মধ্যে ইক্ষক হলো তৃতীয় জাহাজ। এই শ্রেণীর প্রথম জাহাজ, আইএনএস সন্ধ্যাক, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে এবং দ্বিতীয় জাহাজ, আইএনএস নির্দেশক, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কমিশন লাভ করেছিল। এই চারটি জাহাজের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১৮ সালের অক্টোবরে। ইক্ষক-এর অন্তর্ভুক্তির ফলে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ভারতের কৌশলগত উপস্থিতি আরও জোরদার হবে।