উত্তরবঙ্গের গ্রামাঞ্চলে এখন যেন উৎসবের আবহ। চারদিকে সোনালি রোদে ঝলমল করছে পাকা আমন ধান, আর সেই ধানের মাঠে দিনভর ব্যস্ততা কৃষকদের। ধান পুরোপুরি পেকে যাওয়ায় শুরু হয়েছে কাটা, গুছিয়ে রাখা ও শুকোনোর পালা। মাঠজুড়ে শ্রম আর আশার এক সুন্দর মেলবন্ধন চোখে পড়ছে।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে শ্রমিক সংকট এবং সময়সাপেক্ষ প্রথাগত প্রক্রিয়ার সেই দৃশ্যপট বদলে দিচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি। ধান কাটা শেষ হলেই যে কষ্টসাধ্য পর্ব—ধান থেকে খড় আলাদা করার কাজ (ঝারাই-বাছাই)—তাতে বিপ্লব এনেছে নতুন যন্ত্র।
আধুনিক যন্ত্রপাতির আশীর্বাদ:
বর্তমানে চাষিদের বড় সহায়ক হয়ে উঠেছে আধুনিক থ্রেসার (thresher) ও মোটরচালিত ঝারাই-বাছাই মেশিন। এই যন্ত্রের দৌলতে একসময়ের পরিশ্রমসাধ্য কাজ এখন হচ্ছে কয়েক গুণ দ্রুত ও দক্ষতার সঙ্গে। কম শ্রমে, কম সময়ে এবং কম খরচে ধান ছাড়ানোর সুবিধে মিলছে চাষিদের।
একজন স্থানীয় চাষির কথায়, “আগে এক বিঘা ধান ঝারাই করতে পুরো দিন লেগে যেত। এখন আধ ঘণ্টা হলেই হয়ে যায়। খরচও অনেক কম।”
কৃষি দফতর জানাচ্ছে, আধুনিক কৃষিযন্ত্র ব্যবহারে একদিকে যেমন উৎপাদনের ক্ষতি কমেছে, তেমনই অন্যদিকে বাড়ছে কাজের গতি। বিশেষ করে ছোট এবং মাঝারি চাষিরা এই প্রযুক্তিগত উন্নতিতে সরাসরি লাভবান হচ্ছেন।
ঘরে উঠছে ধান, মুখে ফুটছে হাসি:
সোনালি ধানের মরশুমে গ্রামবাংলার মাঠে এখন শুধু ফসলেরই নয়, খুশিরও সমারোহ। আধুনিক যন্ত্রপাতির সহায়তায় তাঁদের পরিশ্রমের ফসল যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। ঘরে ধান তোলার পাশাপাশি চাষির মুখে ফুটে উঠছে সন্তুষ্টির হাসি, যা কৃষি ক্ষেত্রে এক নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে।