শুভেন্দু অধিকারীর নিজের বুথেই ভোটার তালিকা বিভ্রাট! খোদ প্রাক্তন সেনাকর্মীদের দিতে হচ্ছে নাগরিকত্বের প্রমাণ

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নিজস্ব বুথ—নন্দনায়েকবার ৭৯ নম্বর বুথে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া এবং নাগরিকত্ব প্রমাণের নির্দেশ ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ৭১১ জন ভোটারের এই বুথে ১১ জনের নাম কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই বাদ পড়েছে এবং আরও বেশ কয়েকজনকে তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য ‘হেয়ারিং’-এ ডাকা হয়েছে।

ঘটনার প্রধান দিকগুলি:

  • প্রাক্তন সেনাকর্মীদের হেনস্থা: দেশের সুরক্ষায় জীবন উৎসর্গ করা দুই প্রাক্তন সেনাকর্মী—প্রদীপ জানা এবং প্রদীপ প্রধানকে এখন প্রমাণ করতে বলা হচ্ছে যে তাঁরা ভারতীয় কি না। তাঁদের অভিযোগ, নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পারলে ভোটার তালিকায় নাম তোলা হবে না।

  • প্রদীপ প্রধানের লড়াই: ১৯৯৪ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া প্রদীপ প্রধান শৈশবেই অনাথ হয়েছিলেন। অতীতে সেনা কর্মীদের ভোটাধিকার প্রয়োগে সীমাবদ্ধতা থাকায় ২০০২ সালের তালিকায় তাঁর নাম ছিল না, যদিও ২০১৯ ও ২০২৩-এর নির্বাচনে তিনি ভোট দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও আজ তাঁকে এই অপমানের মুখে পড়তে হচ্ছে।

  • অদ্ভুত প্রশাসনিক যুক্তি: প্রশাসনের দাবি, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় এই ব্যক্তিদের বাবার নামের সাথে ‘লিংক’ পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ বিস্ময়করভাবে, যাঁদের নাম বাদ পড়েছে তাঁদের সন্তানদের নাম ভোটার তালিকায় ঠিকই রয়েছে।

  • সাধারণ নাগরিকদের ভোগান্তি: ৩০ বছর আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে এসে নন্দীগ্রামে সংসার পাতা টোটো চালক সন্তোষ রানাকেও একই ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। তিন দশক ধরে ভোট দেওয়া এবং কর দেওয়ার পরেও নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ক্ষুব্ধ তাঁর পরিবার।

রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক গুরুত্ব: যে সময়ে অনুপ্রবেশ এবং ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত, সেই সময়ে খোদ বিরোধী দলনেতার বুথেই প্রাক্তন সেনাকর্মী ও দীর্ঘদিনের বাসিন্দাদের এই হেনস্থা প্রশাসনিক ব্যর্থতার দিকেই আঙুল তুলছে। এই ঘটনা রাজ্য জুড়ে ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা এবং SIR প্রক্রিয়ার নির্ভুলতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন বসিয়ে দিয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy