পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় এক চাঞ্চল্যকর নিখোঁজ রহস্য দানা বেঁধেছে। জনশুনানির মাত্র দু’দিন আগে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গেলেন ২৩ নম্বর বুথের বিএলও (BLO) তথা স্কুল শিক্ষক অমিত কুমার মণ্ডল। গত মঙ্গলবার থেকে তাঁর কোনো হদিশ মিলছে না। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, নিখোঁজ হওয়ার সময় তিনি নিজের মোবাইল ফোন, বিএলও পরিচয়পত্র এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ এসআইআর (SIR) সংক্রান্ত নথিপত্রও বাড়িতেই ফেলে গিয়েছেন।
কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের বিকিহাটের বাসিন্দা অমিতবাবু পেশায় কেতুগ্রামের উদ্ধারনপুর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ বাজার থেকে বাড়ি ফেরেন তিনি। এরপর মোটরবাইকটি গ্যারেজে রেখে বাড়ির লোককে জানান যে, বিএলও-র একটি মিটিং আছে। সেই বলে বেরোনোর পর থেকেই তাঁর মোবাইল বন্ধ এবং তিনি বেপাত্তা। দীর্ঘ সময় খোঁজ না মেলায় পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং রাতেই কাটোয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।
পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিএলও-র দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই অমিতবাবু প্রবল মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন। তাঁর দায়িত্বাধীন ২৩ নম্বর বুথে ৬৪১ জন ভোটার রয়েছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই শুরু হওয়ার কথা ছিল ৩৩ জন ভোটারের এসআইআর শুনানি। নিয়ম অনুযায়ী, এই শুনানির সময় সংশ্লিষ্ট বিএলও-র উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। কিন্তু সেই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ার ঠিক আগেই তাঁর এভাবে উধাও হয়ে যাওয়া প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
ইতিমধ্যেই কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন ও পুলিশ অমিতবাবুর খোঁজে তৎপরতা শুরু করেছে। মহকুমাশাসক অনির্বান বসু ক্যামেরা বা মাইকের সামনে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া না দিলেও জানিয়েছেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও অমিতবাবুর কোনো সন্ধান না মেলায় স্থানীয় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এটি নিছকই নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা, নাকি এর পেছনে কোনো গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।