‘শুধুমাত্র হয়রানি’, ৬ বছর পর সিবিআইয়ের আর্জি নিয়ে কড়া মন্তব্য শীর্ষ আদালতের! আপাতত বহাল ডিজি রাজীবের আগাম জামিন

সারদা চিটফান্ড মামলায় রাজ্য পুলিশের ডিজি (Director General of Police) রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে করা সিবিআইয়ের আবেদন বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই সিদ্ধান্তের ফলে আপাতত স্বস্তি পেলেন রাজীব কুমার। জানা গিয়েছে, তাঁর আগাম জামিন (Anticipatory Bail) বহাল থাকছে।

শুক্রবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সিবিআইয়ের আবেদন বাতিল করে দেয়। প্রধান বিচারপতি সম্প্রতি এই মামলাটি এত দিন পরে কেন আবার এসেছে এবং এতদিন সিবিআই কী করছিল—এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ মন্তব্য করে বলেছিল, এই মামলাটি শুধুমাত্র হয়রানির জন্য করা হয়েছে।

কী ছিল সিবিআইয়ের আবেদন?
সারদাকাণ্ডের তদন্তে অসহযোগিতা ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে ৬ বছর আগে রাজীব কুমারের নামে আদালত অবমাননার একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছিল। সিবিআইয়ের অভিযোগ ছিল, সুপ্রিম কোর্ট তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দিলেও রাজীব কুমার বাধা দিয়েছেন এবং তাঁর বাড়িতে গেলে সিবিআই অফিসারদের হেনস্থা করা হয়।

২০১৯ সালের ১ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্ট রাজীব কুমারের আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করলে, সিবিআই সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায় এবং তাঁর আগাম জামিন বাতিলের আবেদন জানায়।

শুক্রবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা রাজীবের আগাম জামিনের আবেদন নিষ্পত্তি করার অনুরোধ জানান। কিন্তু শীর্ষ আদালত সিবিআইয়ের সেই আবেদন মানেনি এবং আবেদন বাতিল করে দেয়।

রাজীবের আইনজীবী বিশ্বজিৎ দে বলেন, “সিবিআই আগাম জামিন চেয়ে যে আবেদন করেছিল, তা বাতিল হয়েছে।”

আট সপ্তাহ পর আদালত অবমাননার শুনানি
যদিও রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে থাকা আগাম জামিন বাতিলের আবেদন খারিজ হয়েছে, তবে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া আদালত অবমাননার মামলাটি এখনও স্থায়ীভাবে বাতিল হয়নি। জানা গিয়েছে, ওই মামলার শুনানি আট সপ্তাহ পরে হবে শীর্ষ আদালতে।

রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করে বলেন, “এটি কেন্দ্র রাজনৈতিক কারণে করছে। রাজনীতির বিষয় নয়। সারদা কাণ্ড তো আর্থিক তছরুপের মামলা। রাজীবের বিরুদ্ধে তেমন কোনও অভিযোগ নেই।”

উল্লেখ্য, সারদা চিটফান্ড মামলার প্রথম তদন্ত শুরু করেছিল রাজ্য সরকারের গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট), যার অন্যতম সদস্য ছিলেন বিধাননগরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দেয়। সিবিআইয়ের দাবি ছিল, রাজীব তদন্তে সহযোগিতা করেননি এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নথি বিকৃত করেছেন। যদিও রাজীব কুমার বরাবরই সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy