দেশীয়ভাবে তৈরি অস্ত্রের প্রচারকে জোরদার করতে আর্মার্ড ভেহিকেলস নিগম লিমিটেড (AVNL) একটি নতুন লাইট ট্যাঙ্ক তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভারত লাইট ট্যাঙ্ক’ (Bharat Light Tank)। কোম্পানিটি ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এর নকশা প্রস্তুত এবং ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ এর প্রথম মডেল (প্রোটোটাইপ) প্রস্তুত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে।
এই ট্যাঙ্কটি রাশিয়ান 2S25 স্প্রট-এসডি মডেলের প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হবে এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অধীনে ভারতে নির্মাণ করা হবে। এটি একটি উভচর (Amphibious) ট্যাঙ্ক হবে, যা নদী এবং হ্রদ অতিক্রম করতে সক্ষম। এতে একটি শক্তিশালী ১২৫ মিমি কামান থাকবে, যার ধ্বংস ক্ষমতা বৃহৎ যুদ্ধ ট্যাঙ্কের মতোই।
ভারত ট্যাঙ্কটি বিশেষভাবে লাদাখ এবং অরুণাচল প্রদেশের মতো উচ্চ-উচ্চতা অঞ্চলে ব্যবহারের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি সক্রিয় ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষা ব্যবস্থা, অ্যান্টি-ড্রোন জ্যামার এবং একটি আধুনিক অগ্নি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দিয়ে সজ্জিত থাকবে। ট্যাঙ্কের ৬০% এরও বেশি উপাদান ভারতে তৈরি হবে, যা তামিলনাড়ুর আভাদিতে অবস্থিত প্রতিরক্ষা শিল্পকে আরও শক্তিশালী করবে।
হালকা ট্যাঙ্ক কেন প্রয়োজন?
২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভারী ট্যাঙ্কগুলি পাহাড়ি এলাকায় চলাচলে সমস্যার সম্মুখীন হয়। সেই সময় চিন হালকা ওজনের ZTQ-15 ট্যাঙ্ক মোতায়েন করলে হালকা ট্যাঙ্কের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভূত হয়। এরপর, সেনাবাহিনী মোট ৩৫৪টি হালকা ট্যাঙ্ক সংগ্রহের পরিকল্পনা করে। এর মধ্যে প্রথম ৫৯টি জোরোয়ার ট্যাঙ্ক L&T এবং DRDO দ্বারা নির্মিত হচ্ছে। বাকি ২৯৫টি ট্যাঙ্কের জন্য প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে এভিএনএল-এর ‘ভারত ট্যাঙ্ক’ একটি শক্তিশালী প্রতিযোগী।
ভারত ট্যাঙ্কের আনুমানিক দাম ধরা হয়েছে ₹২০-২৫ কোটি, যা এটিকে একটি সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য বিকল্প করে তুলেছে। যদি সব পরিকল্পনা মতো চলে, তবে আগামী বছরগুলিতে এই ট্যাঙ্ক ভারতের পাহাড়ি সীমান্ত সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে।